ফেনী
সোমবার, ৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১০:৩০
, ৩রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম:
আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাসিমের দুর্নীতির তদন্ত শুরু ফেনীতে দুর্গাপূজায় নাশকতা ঠেকাতে মণ্ডপ পাহারায় থাকবে বিএনপি নেতাকর্মীরা দুই বছর ধরে প্রবাসী হয়েও উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক পদে বহাল! ধর্মপুর এডুকেশনাল এস্টেটের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বন্যা প্রতিকারে ৮ দফা দাবি জানিয়ে ফেনীতে এবি পার্টির মানববন্ধন ফাজিলপুরে জামায়াতের ইউনিট সভাপতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর রোগমুক্তি কামনায় ফেনীতে দোয়া মাহফিল ফেনীতে অসহায়দের মাঝে জামায়াতের অটোরিকশা-নগদ অর্থ বিতরণ  ৫৩ বছরেও তিস্তা নদীর চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের নগদ অর্থ সহায়তা তুলে দিলেন ছাত্রদল নেতা 

আওয়ামী লীগ-বিএনপির নির্বাচনী ভাবনা

 

মাসুদ মজুমদার-বিএনপির কক্সবাজারমুখী পথযাত্রা এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ শেষে সরকার নড়েচড়ে বসেছে। পাল্টা দু’টি জনসভার আয়োজন করে জাতীয় নির্বাচনের আমেজটা সরকারই সৃষ্টি করে দিয়েছে। দিনক্ষণ প্রকাশ না করলেও, রাজনীতি নির্বাচনমুখী হতে শুরু করেছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সংলাপ করে জানান দিয়েছে তারাও প্রস্তুত। নির্বাচনের হুইসেল বাজালেই ইসি নির্বাচনী মাঠ সাজাতে নেমে পড়বে। প্রবল দাবির পরও তারা সেনা মোতায়েন ‘প্রয়োজনসাপেক্ষ’ বলছেন। ইভিএম থাকছে না। এর আগেই সরকার তাদের ইমেজটা ‘মেরামত’ বা রিপেয়ার করে নিতে চায়। হ্যাঁ, ইংরেজিতে ‘ইমেজ রিপেয়ারিং’ নামে একটি কথা চালু আছে। এ দু’টি শব্দের মাধ্যমে বোঝানো হয়, ‘ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধার’। ২০১৪-এর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এ প্রসঙ্গে ‘ধারাবাহিকতা রক্ষা’র বিষয়টি সরকারের নিজস্ব ব্যাখ্যা। সহজ কথায়, সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি বলেই আওয়ামী লীগ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ভাবমর্যাদার সঙ্কটে রয়েছে আজো। বর্তমান সরকার নীতিগতভাবে বৈধতার সঙ্কট কাটাতে ব্যর্থ হয়েছে। এর কারণেই তাদের ইমেজ ক্রাইসিস দেখা দিয়েছে। ভাবমর্যাদার বিষয়টি এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন এত বেশি প্রশ্নবিদ্ধ ছিল যার দগদগে ক্ষত কোনো ওষুধেই সারেনি। চার বছর ধরে এটাই সরকারকে তাড়া করে ফিরছে। বাকি সব বাড়াবাড়ি এর সাথে যোগ হয়েছে। দ্রুত আরেকটি নির্বাচন করার অবস্থান থেকে ‘ইউটার্ন’ সরকারের প্রতিশ্রুতির বিশ্বাসযোগ্যতাকে নিঃশেষ করে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ এবার রমরমা আয়োজনের মাধ্যমে ৭ মার্চের স্মৃতি তুলে এনে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার ধারণা করছে, ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণটি জাতিকে নতুন করে ভাবাবে। বঙ্গবন্ধুর ইমেজ রাজনীতিকে নতুনভাবে মেরুবদ্ধ করে দেবে- এর সুফল ভোটের বাক্সে মিলবে। এর মাধ্যমে আপাতত দু’টি লক্ষ্য অর্জন করার ইচ্ছা, অন্য সব ইস্যু থেকে সবার দৃষ্টি ফিরিয়ে সরকার চালানোর বিতর্ক ও ঝুঁকি কমানো এবং বিরোধী পক্ষকে নির্বাচনকেন্দ্রিক হোমওয়ার্কে ব্যস্ত রাখা। অন্য দিকে, সরকার এই সুযোগে জাতীয় নির্বাচনের আগেই নানা ইস্যুতে প্রশ্নবিদ্ধ ইমেজ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে চায়। এ কারণেই আগাম না রুটিন নির্বাচন, সেটা স্পষ্ট করা হচ্ছে না। ‘ঝোপ বুঝে কোপ মারা’র ষোল আনা ইচ্ছে রয়েছে সরকারি দলের। বিরোধী দলকে ছাড় দেয়ার ইচ্ছাটা অপ্রকাশিত রাখাও সরকারি দলের কৌশল। সরকারি দল নিজস্ব জনশক্তিকে ধারণা দিয়েছে, ৩০০ আসনের জন্য আওয়ামী লীগ একসাথে লড়াই করবে না। কিছু আসনে জোটকে শরিক রাখবে। আবার সব বিরোধী দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচনও করতে চায় না। একই সাথে বিরোধী জোটকে ১০০ আসনের বেশি দিতেও চায় না। বিএনপিকে কম আসনে বিরোধী দলে বসাতে পারলেই ‘কেল্লা ফতেহ’ বলে ভাবছে সরকার।

এক দিকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ, অন্য দিকে নিজস্ব শক্তি বলে সরকার গঠনের চ্যালেঞ্জ। এ দু’টি বিষয় একসাথে অর্জন করা সহজ নয়। অথচ দুর্লভ কিংবা অস্বাভাবিক হলেও আওয়ামী লীগ এটাই অর্জন করতে চায়। সহজ কথায়, আওয়ামী লীগকে ইমেজ রিপেয়ারিং করেই নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে- এটা এবার বিবেচনার বাইরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সব উন্নয়নের খতিয়ান দিয়েও বিগত আট বছরের অর্জন-বর্জনের হিসাব মেলানো সহজ নয়। নির্বাচন মানে জনগণের মুখোমুখি দাঁড়ানো, যা এত দিন সরকার অবজ্ঞা করেছে। সরকারি দল গণতন্ত্রকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করার একটা অসাধুতাও প্রদর্শন করেছে। আওয়ামী লীগ জানে, নির্বাচনকে সামনে রেখে মুখে লাগাম পরতে হয়। জনগণের দোহাই দিয়ে মুখে ফেনা তুলতে হয়। প্রতিশ্রুতির জোয়ার বইয়ে দিতে হয়। অপর দিকে, বিরোধী দল ও জোট তাদের ক্ষোভ-দুঃখের কথাগুলো নিয়েই জনগণের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছে। উন্নয়নের একটা ফিরিস্তি তুলে ধরা ছাড়াও আওয়ামী লীগ আগুনসন্ত্রাস ও জঙ্গি মদদদাতার প্রসঙ্গ তুলে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে।

গুম, দুঃশাসন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি, চাপের মুখে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ প্রভৃতির মোক্ষম জবাব আওয়ামী লীগের কাছে নেই। অসংখ্য ভোটারকে সরকার সংক্ষুব্ধ মানুষের তালিকার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এই সংখ্যা বেশুমার এবং অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। জঙ্গি ইস্যুতে সরকার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিয়েছে বলেই জনগণ মনে করে। মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার অ্যাজেন্ডা ও ফাঁসি কার্যকর করার বিষয়টিকে জনগণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মনে করে, এটি শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার ছিল না। এর সাথে পড়শিদের বোঝাপড়া ছিল। হেফাজত ইস্যু থেকে কওমি মাদরাসার সনদ বিতর্ক, হামলা-মামলা, রাজনৈতিক অধিকার হরণ, ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির দায়- কোনোটির ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগ ভোটের মাঠ থেকে পালিয়ে বেড়াতে পারবে না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার, মানুষের সামনে এমন কোনো বক্তব্য তাদের দেয়ার নেই, যা ভোটার-মনকে আকৃষ্ট করতে পারে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ঘটনা ‘হিন্দুপ্রীতির’ বাগাড়ম্বরে ছাই ছিটিয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের চেহারা উদোম করে দিয়েছে। রামু থেকে নাসিরনগর হয়ে রংপুর, ভোটব্যাংকের তলা ফুটো করে দিতে পারে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প কতটা ভয়াবহ হতে পারে তার প্রমাণ, গেল বছর ভারতে দুই গণ্ডা মুসলিম যুবককে জঙ্গি সাজিয়ে হত্যা করা হলো। এরা কারাগারে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে যত্ত সব উদ্ভট অভিযোগ তুলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকে ধামাচাপা দেয়া হলো। সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশের রংপুর, নাসিরনগর নিয়ে ভাবেন। নিজের সরকারের অপকর্ম দেখেন না।

মোটামুটি গ্রহণযোগ্যতার নিশ্চয়তা পেলে বিএনপি নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত। এটা কিছুটা ঠেকে শেখা হলেও বিএনপি আত্মবিশ্বাসের জোরেই ভোটারদের সামনে দাঁড়ানোর চিন্তা করছে। বিএনপি মনে করে, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে ২০০ আসন নিশ্চিত করা কঠিন হবে না। তাদের ধারণা, নিজেদের ভোট, জোটের সমর্থন ও নেগেটিভ ভোট বিএনপিকে সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে। তারা রাজনৈতিক মজলুম, এটা বোঝানো কঠিন নয় বলে মনে করছে। তারা বঞ্চনার শিকার, এটাও ভোটার-মনে দাগ কাটার মতো। খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা থেকে মামলার মাধ্যমে রাজনৈতিক হয়রানি পর্যন্ত সব ইস্যু নির্বাচনের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে। সরকার এবার শুরুতে ৭ নভেম্বর বিএনপিকে খুব ঠাণ্ডা মাথায় পালন করতে দেয়নি। এই ইস্যুতে বিএনপি জনগণের আদালতে মামলা ঠুকে দিয়ে ধৈর্য দেখাতে চায় বলে শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত জনসমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। এটাও ভোটের রাজনীতির কৌশল। এসব চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়েও আওয়ামী লীগের নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই- সেটা আগাম হোক আর রুটিনমতো হোক। বরং আওয়ামী লীগের বাড়তি সুবিধা হচ্ছে, দলটি নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে জানে। ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ কাকে বলে, সেটাও তাদের জানা। তা ছাড়া ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ অসংখ্য সুবিধাভোগী সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা তাদের জন্য বিরাট আশীর্বাদ- এটা তারা জানে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়া মানে, সুবিধাভোগী ও কায়েমি স্বার্থবাদীদের জন্য মাথায় পর্বত ভেঙে পড়া। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য রাজনৈতিক কর্মীদের চেয়ে বিভিন্ন পেশাজীবী এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দলবাজদের অংশটির গরজ বেশি। তারা ক্ষমতাশক্তির পূজারী। রাতারাতি রঙ ও দল পরিবর্তন তাদের কাছে নস্যি। তারা জানে- ক্ষমতার দল পাল্টায়, ক্ষমতা পাল্টায় না। তারা ক্ষমতার সাথেই থাকে বরাবর। ক্ষমতাচর্চায় বিএনপির অভিজ্ঞতা কম নয়। তারাও জানে- ক্ষমতার হাতবদলের সাথে সাথে কিভাবে মোসাহেব-চাটার দল ও উচ্ছিষ্টভোগীরা পক্ষ পাল্টে নেয়।

সবার সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন; আস্থাভাজন ও সক্ষম ইসি। শুরুতেই যেমনটি উল্লেখ করেছি, আওয়ামী লীগ ভাগবাটোয়ারার যে নির্বাচন করতে আগ্রহী, সেটার মাধ্যমে ইমেজ রিপেয়ারিং হওয়ার কোনো সুযোগ দেখি না। ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন না করে বরং ১৯৯৬ সালের মতো আরো একবার সুযোগ দেয়ার আবেদন- আরেকবার সুযোগ দিলে ভুলগুলো শোধরানোর প্রতিশ্রুতি; মোটা দাগের ভুল ও বাড়াবাড়িগুলোর জন্য সন্তোষজনক কৈফিয়ত দিলে আওয়ামী লীগ ভোটব্যাংক, সহমর্মী ও আদর্শিক মিত্রদের ভোট সহজেই বাক্সে ঢুকাতে পারবে। আওয়ামী লীগ মনে করছে, তারা উন্নয়নের যে ‘জোয়ার’ সৃষ্টির দাবি করছে- সেটা জনগণ আস্থায় নিয়েছে। তাই সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষার দাবিকে জনগণ সম্মান করবে। অপর দিকে বিএনপির ধারণা, লুটপাটের উন্নয়ন এবং কসমেটিক ধারণাই সরকারকে ১০ টাকা কেজির চালের মতোই তামাসার বস্তু বানাবে।

কোনো কারণে ভোটার-মনে এবারো যদি নিশ্চিতভাবে দাগ কেটে যায়, আওয়ামী লীগের আমলে কিংবা তাদের সাজানো মাঠে নির্বাচন কোনো দিন গ্রহণযোগ্য হবে না; তাহলে বিগড়ে যাওয়া ভোটার-মনের দ্রোহ রাজনীতিকে টালমাটাল করে দিতে পারে। সেটা পুলিশি কায়দায় ও র‌্যাবের সাহায্যে মোকাবেলা করা সহজ না-ও হতে পারে। তখন নিরাপদ নির্গমন বা অবতরণ কিংবা জবরদস্তির পথে চলার মতো সহজ কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ কোনো পথ খোলা থাকার কথা নয়। তাই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই। দেশের বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি-আওয়ামী লীগ কারোই বিদেশমুখী হওয়া কল্যাণকর নয়। লেবার না কনজারভেটিভ, ডেমোক্র্যাট না রিপাবলিকান, বিজেপি না কংগ্রেস- বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির ইস্যু নয় এটা। এ ধরনের মানসিক দাসত্ব ও মনস্তাত্ত্বিক গোলামির চিন্তা না করে জনগণের ওপর আস্থা রাখাই কল্যাণকর। ভিন্নরাষ্ট্রের ভোট এবং সরকার অবশ্যই আমাদের মগজে থাকতে হবে। সেটা আমাদের পররাষ্ট্রনীতির কর্মকৌশলের বিষয়।

মোটকথা, ভোটার-মনে জায়গা করার ওপরই সব দলের সাফল্য নির্ভর করবে। রোহিঙ্গা ইস্যু সবার চোখ খুলে দেয়ার কথা। বিপদে বন্ধুর পরীক্ষা হয়ে গেছে। সবাই ‘স্বার্থের পাগল’। চীন-রাশিয়া-ভারত- সবার অ্যাজেন্ডা আলাদা। বাংলাদেশ ব্যবহৃত হতে চাইলে ‘বন্ধু’র অভাব হবে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যে সমঝোতা হয়েছে, সেটা চুক্তি নয়- এক ধরনের আইওয়াশ। জনগণ এটা টের পেয়ে গেছে। তাই এ ধরনের বন্ধুত্বের মূল্য জনগণের কাছে খুব একটা নেই।

সব কিছুর পরও নির্বাচনে জেতার জন্য দুটো বড় দলই কিছু কৌশল নিয়ে ভাবছে। বিএনপির ধারণা- জোট ভাঙার উদ্যোগ নেবে সরকার। বিএনপিকে চাপে রাখার জন্য হয়রানি বাড়াবে। দৌড়ের ওপর রাখতে পুলিশি তৎপরতা জোরদার করবে। মাঠপ্রশাসন মনের মতো সাজাবে। ‘ইসলামপন্থী’দের কিছু ভুঁইফোঁড় দলকে দিয়ে নির্বাচনী জোট খাড়া করবে। আওয়ামী লীগ মনে করে- বিএনপি ভোটারদের কাছে পৌঁছতে পারলে নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা কঠিন হবে। বিরোধী জোট আওয়ামী লীগকে ফাঁদে ফেলার জন্য রক্ষণভাগে থেকেও এমন কিছু তৎপরতা চালাবে, যা আওয়ামী লীগের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। তা ছাড়া সিমপ্যাথি পাওয়ার জন্য বিএনপি এবার কিছু পেপারওয়ার্ক ও প্রচারপত্রের দিকে মনোযোগ দেবে। সরকারের সাফল্যের খতিয়ান চ্যালেঞ্জ করে- এমন কিছু তথ্য উপস্থাপন করবে, যা চ্যালেঞ্জ করা কষ্টকর হবে। বিএনপি জোট বিদেশীদের সিম্প্যাথি পেতে লবি বাড়াবে বলেও আওয়ামী লীগ মনে করে। তার ওপর, সোস্যাল মিডিয়ায় মনোযোগ দেবে। ওপেনসিক্রেট এসব কৌশল কমবেশি সবার জানা। তার পরও ভোটের রাজনীতির নিয়ামকশক্তি জনগণ। সেটা বড় দুটো জোট মাথা থেকে ফেলতে চাচ্ছে না।

বিএনপি ভোটারদের মনের মনস্তত্ত্বটা ছুঁতে চায়। সেটা সহায়ক সরকার হোক আর নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধারণাই হোক। জনমত বিএনপির এমন ধারণার পক্ষে। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার ওপর নির্ভর করবে ইসির সাফল্য-ব্যর্থতা এবং নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা।

masud2151@gmail.com

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo