আহমদুল হাসান আসিফ-মামলার তিন আসামিকে গ্রেফতার করায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমণ্ডি থানার এসআই আল হেলালকে ক্লোজ করা হয়েছে। এমনকি জামিন নেয়ার আগে তিন আসামিকে ছেড়ে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে ধানমণ্ডি থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
বাদীর অভিযোগ, শনিবার সমঝোতার নাম করে তার জিম্মায় আসামিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তার কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগও করেন বাদী।
সমঝোতা করে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ধানমণ্ডি থানা পুলিশ বাদীকে চাপ দিচ্ছে। এদিকে তিন আসামিকে ছেড়ে দেয়ার একদিন পর তিন আসামি আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।
মাহফুজা রশিদ লাকী নামের এক নারী অভিযোগ করেন, ইমরুল বাহার সুমন ও নোমান হোসেন বনি নামের দু’জন তার কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করেছেন। এ অভিযোগে তিনজনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন তিনি।
পরে মামলাটি ধানমণ্ডি থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। মামলায় একজন নারীকেও আসামি করা হয়। মামলাটি ধানমণ্ডি থানায় আসার পর এসআই আল হেলাল শুক্রবার রাতে তিন আসামিকে গ্রেফতার করেন। এ ঘটনায় এসআই হেলালকে রমনা বিভাগের ডিসি ক্লোজ করেন।
আসামি গ্রেফতারের পর ছেড়ে দেয়া যায় কিনা, এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি (পিপি) মো. আবদুল্লাহ আবু বলেন, গ্রেফতার হওয়ার পর থানা থেকে আসামি ছেড়ে দেয়ার বিধান নেই।
নন-এফআইআর মামলাগুলোর ক্ষেত্রে অনেক সময় থানায় মুচলেকা নিয়ে আসামি ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু গ্রেফতারের পর আসামিকে ছাড়া হবে কিনা, এ বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন। এ বিষয়ে ধানমণ্ডি থানার ওসি আবদুল লতিফ যুগান্তরকে বলেন, সমঝোতার শর্তে বাদীর জিম্মায় আসামি ছাড়া হয়েছে। অর্থের লেনদেন নিয়ে মামলা, এ কারণে এটা করা হয়েছে।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনে সমঝোতার শর্তে তিন আসামি ছাড়া হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার বলেন, মাহফুজা রশিদ লাকীর বিরুদ্ধে আদালতে চেক ডিসঅনারের মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর তিনি পাল্টা মামলা করেছেন।
মামলার আসামি গ্রেফতারের পর ছেড়ে দেয়ার বিধান আছে কিনা এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওসি চাইলে যে কোনো আসামি ছেড়ে দিতে পারেন। আপনি সিআরপিসি পড়ে দেখেন।
আসামিরা প্রভাবশালী, তাই এসআই ক্লোজড : আসামিরা প্রভাবশালী এ কারণে এসআই আল হেলালকে ক্লোজ করেছেন রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার। এ বিষয়ে হেলাল যুগান্তরকে বলেন, একটি মামলার তিন আসামিকে গ্রেফতার করি। এরপর ডিসি অফিসে আমাকে ক্লোজ করা হয়েছে।
এদিকে হেলালকে ক্লোজ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশের ধানমণ্ডি জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমার জানা নেই।
আপনি ডিসি (উপকমিশনার, রমনা) বিভাগের সঙ্গে কথা বলেন। ধানমণ্ডি জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ কাফী এবং ধানমণ্ডি থানার ওসি আবদুল লতিফও এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার বলেন, এটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। এদিকে মামলার বাদী মাহফুজা রশিদ লাকী যুগান্তরকে বলেন, সমঝোতার কথা বলে আমার কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে আসামি ছেড়ে দেয় পুলিশ। এখন সমঝোতার জন্য পুলিশ ব্যাপক চাপ দিচ্ছে।
এ বিষয়ে ধানমণ্ডি থানার ওসি আবদুল লতিফ বলেন, বাদী স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর করেছেন।