আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে স্বচ্ছ করা এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কোচিং টিউশন বাণিজ্য বন্ধ করতে প্রাইভেট পড়ানোর নীতিমালা চালু করেছে এবং নোটবই লেখা, বাজারজাতকরণ, বিক্রি ইত্যাদির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে ২০১২ সাল থেকে। কিন্তু ‘কোচিং ও প্রাইভেট টিউশনি বন্ধ’ হচ্ছে না। দেশব্যাপী টিউশনিতে জড়িত শিক্ষকদের তালিকা প্রথমবারের মতো তৈরি করার কাজ করছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। এর মহাপরিচালক জানিয়েছেন, ওই তালিকা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনও এ বিষয় কাজ শুরু করেছে। ওই কাজে সাফল্য না আসার কারণের ব্যাপারে নিশ্চয়ই অনুসন্ধান করা হয়েছে। তবে শিক্ষকবেশী ব্যবসায়ীদের শিক্ষাপেশা থেকে উচ্ছেদ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না, জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা এবং নিবেদিত শিক্ষকদের উদ্দীপনামূলক কাজের কী ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা জানা যায়নি।
একজন নিবেদিত শিক্ষকের মূল লক্ষ্য তার সৃষ্টির প্রতি। অল্প, স্থায়ী শিল্পতুল্য তার ছাত্র; একে নিপুণভাবে গড়েন শুধু একজন দক্ষ কারিগর। সারা জীবন তার আদর্শ আচার-আচরণ ও মানবিক মূল্যবোধকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে অনুসরণ করতে থাকে। সেটি মানবসমাজকে উন্নত করার জন্য অপরিহার্য। শিক্ষার্থীদের পঠনসামগ্রী উন্নয়ন অল্পস্থায়ী কাজ; কারণ এটি পরিবর্তনীয়। এটি শিক্ষকের সম্পূরক কাজ এবং একে তার সম্পূরক আয়ের উৎসও বলা যায়। শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক জগতেও তিনি তার লেখার মাধ্যমে অবদান রাখতে পারেন। সেটি সৃজনশীল স্থায়ী কাজ এবং সৃজনশীল বলে এ কাজটি তার স্থায়ী সৃষ্টি হতে পারে। শিক্ষকদের এ সুকুমারবৃত্তির চর্চার দিকনির্দেশনা দেয়া আমাদের সামাজিক দায়িত্ব।