ফেনী
শুক্রবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:১৮
, ২৭শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ কিলোমিটার যানজট গৃহযুদ্ধের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান ড. ইউনূসের ফেনীতে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ বাংলাদেশকে করিডোর দিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহবান বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি উত্তরা’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল ইয়াং স্টার ক্লাবের দোয়া ও ইফতার মাহফিল ফরহাদ নগর ইউনিয়ন বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিল ফসলি জমির মাটিকাটা রোধে গভীর রাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযান,এস্কেভেটর-ট্রাক জব্দ বালিগাঁওয়ে প্রতিপক্ষের বাধায় থমকে গেল ব্যবসায়ীর গৃহ নির্মাণ,হামলার অভিযোগ

কেমন দেশ মিয়ানমার

MORE ON IMAGE FORUM This photo taken on September 30, 2009 shows the Shwesandaw pagoda (L) at dusk in Bagan. Once the capital of the first Myanma Kingdom, Bagan is home to over 2,500 Buddhist monuments built between the 10th and 14th centuries AD. The mural paintings contained within some 300 temples represent a unique collection of southeast Asian religious art from this period. Bagan has been on a tentative list of World Heritage cadidate sites since it was submitted by Myanmar in 1996 despite which the military junta has overseen the building of modern structures in the area. AFP PHOTO / NICOLAS ASFOURI

 
আহমেদ বায়েজীদ-প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির সাথে বাংলাদেশের রয়েছে ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত। তবে নিকটতম প্রতিবেশী হওয়া সত্ত্বেও মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা অঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা কম। এর বড় কারণ মিয়ানমার সার্কভুক্ত দেশ নয়। এ ছাড়া মিয়ানমারের কয়েক দশকের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞাও একটি কারণ। মিয়ানমার সম্পর্কে আমাদের দেশের মানুষের ধারণাও খুব স্পষ্ট নয়। অং সান সু চির গণতান্ত্রিক আন্দোলন আর রোহিঙ্গা নির্যতন এ দুটি বিষয় ছাড়া সাধারণত মিয়ানমার প্রসঙ্গ আসে না আমাদের গণমাধ্যমে। দেশটির আর্থসামাজিক চিত্র নিয়ে এবারের মূল রচনা
চিরকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতা
দীর্ঘ দিন ব্রিটিশ উপনিবেশ থাকার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের কাছ থেকে মিয়ানমার দখল করে জাপান। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাপানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে মিয়ানমার (তৎকালীন বার্মা)। স্বাধীনতার পর থেকে দেশটি একের পর এক রাজনৈতিক ও জাতিগত অস্থিতিশীলতার মোকাবেলা করছে। নানা ঘটনা-দুর্ঘটনায় বারবার দেশটিতে হানা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। বিভিন্ন আকারের একের পর এক গৃহযুদ্ধ মিয়ানমারের অর্থনীতিসহ সব উন্নয়নকে ব্যাহত করেছে।

স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র তিন মাসের মাথায় সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে কমিউনিস্টরা। ঘটনার সূত্রপাত আরো আগে। স্বাধীনতা অর্জনের ছয় মাস আগে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা অং সান (বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চির পিতা)। সে সময় তিনি ছিলেন ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য গঠিত ছায়াসরকারের প্রধান। সচিবালয়ে বৈঠককালে ছয় মন্ত্রীসহ তাকে হত্যা করে ব্রিটিশ শাসিত বার্মার শাসকের অনুগত বাহিনী। এ ঘটনার রেশ থেকে বের হতে পারেনি স্বাধীন মিয়ানমার।
বিভিন্ন অস্থিরতার মধ্যে ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইনের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থান হয় দেশটিতে। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী গড়ে ওঠা বিক্ষোভ কঠোরহস্তে দমন করা হয়। এক দিনেই রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত হয় ১৫ ছাত্র। এরপর প্রতিটি বিক্ষোভ অত্যন্ত নির্মমতার সাথে দমন করেছে সেনাবাহিনী। ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সেনাকর্মকর্তাদের হাতে বিভিন্ন পদ্ধতিতে শাসিত হয় দেশ। একপর্যায়ে তারা চাকরি থেকে পদত্যাগ করে রাজনীতিক সেজে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করে। সেনাশাসকদের অধীনে ক্রমেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে মিয়ানমার। অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে ক্ষোভ জমতে থাকে জনমনে। একপর্যায়ে যা রূপ নেয় বিক্ষোভে।

১৯৮৫ সাল থেকে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চূড়ান্ত রূপ লাভ করে ’৮৮ সালে। সরকার আগের মতোই কঠোরহস্তে বিক্ষোভ দমন করতে সশস্ত্রবাহিনীকে মাঠে নামায়। সেই বিক্ষোভ ইতিহাসে ‘৮৮৮৮’ বিক্ষোভ নামে পরিচিত। এ সময়ই সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন অং সান সু চি। প্রচণ্ড অস্থিরতার মুখে জেনারেল স মুংয়ের নেতৃত্বে আবার ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। মুং সরকারের সময় দেশটির নাম বার্মা থেকে মিয়ানমার করা হয়। রাজধানী রেঙ্গুনের নাম পাল্টে রাখা হয় ইয়াঙ্গুন।
এই সরকার মার্শল ল’ জারি করে ‘রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা পুনর্বহাল কমিটির (এসএলওআরসি)’ মাধ্যমে দেশ শাসন করে। মুং নিজেকে কমিটির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন। তবে ১৯৯০ সালে দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বহু বছর পর ভোটাধিকারের সুযোগ পেয়ে জনগন পুরোপুরি বয়কট করে সেনাসরকারকে। পার্লামেন্টের শতকরা ৮০ ভাগ আসন পেয়ে জয়লাভ করে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি হয় না জান্তা সরকার। নেতাকর্মীদের ওপর শুরু হয় দমনপীড়ন। রাষ্ট্রীয় শান্তি ও উন্নয়ন পরিষদ (এসপিডিসি) গঠন করে শুরু হয় সামরিক শাসনের নতুন অধ্যায়। ১৯৯২ সালে স্বাস্থ্যগত কারণে জেনারেল মুং ক্ষমতা ছেড়ে দিলে তার সেকেন্ড ইন কমান্ড জেনারেল থান শোয়ে নিজেকে সিনিয়র জেনারেল পদমর্যাদায় উন্নিত করার ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসেন। আগের শাসকদের তুলনায় থান শোয়ে ছিলেন অনেক বেশি আগ্রাসী। তার সময় আন্তর্জাতিক মহল থেকে দেশটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনয়নের চেষ্টা করা হলেও তাতে কর্ণপাত করেননি। জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা বারবার অনুরোধ করেও তাকে অং সান সু চির সাথে সংলাপে বসতে রাজি করাতে পারেনি। ২০০৫ সালে তিনি রাজধানী পরিবর্তন করে ইয়াঙ্গুন থেকে পিনমানা শহরে নিয়ে আসেন। শহরটির নতুন নামকরণ করা হয় নেইপিদো অর্থাৎ রাজাদের শহর।

২০০৭ সালে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বৌদ্ধভিক্ষুরা প্রতিবাদী হয়ে উঠলে থান শোয়ে ভিক্ষুদের আন্দোলন কঠোরহস্তে দমন করে। ২০০৮ সালে প্রবর্তন করা হয় নতুন সংবিধান। এ সংবিধানে সামরিক জান্তা দেশটির প্রশাসনসহ সব স্তরকে সামরিকীকরণের বৈধতা দেন। ২০১০ সালে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করে এই সরকার। তবে পাতানো নির্বাচনের অভিযোগে অং সান সু চির দল সেই নির্বাচন বয়কট করে। অবশ্য নির্বাচনের আগেই সু চিকে গৃহবন্দী করা হয়। সু চি তার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। জান্তা সরকার তাকে চিরতরে দেশ ত্যাগের শর্ত দিলেও তিনি স্বামী-সন্তানের সান্নিধ্য ত্যাগ করে গৃহবন্দী অবস্থায় দেশেই থেকেছেন।
অনিয়মের অভিযোগে ২০১০ সালের সাধারণ নির্বাচন বয়কট করে সু চির দল এনএলডি। সে বছরই নভেম্বরে সু চিকে মুক্তি দিলে ২০১২ সালের উপনির্বাচনে ৪৫টি আসনের মধ্যে ৪৩টি লাভ করে তার দল। এ সময় দেশী-বিদেশী চাপে ধীরে ধীরে নমনীয় হতে থাকে সেনাসমর্থিত সরকার। ২০১৫ সালের নির্বাচনে সু চির দল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় পর গণতন্ত্র ফিরে আসে দেশটিতে।

বর্তমান রাজনৈতিক চিত্র
দীর্ঘ প্রায় ছয় দশক পর গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে এসেছে মিয়ানমার। তবে দীর্ঘ দিনের সেনাশাসনের প্রভাব থেকে পুরোপুরি বের হতে পারেনি দেশটি। সামরিক শাসকেরা দেশের বিভিন্ন সেক্টরে সেনাবাহিনীর আধিপত্য কায়েম করেছে। ২০০৮ সালের ১০ মে গৃহীত নতুন সংবিধানে অদ্ভুত একটি ধারা সংযোজিত করা হয় যাতে বলা হয়েছে, কোনো নেতার স্বামী বা সন্তান বিদেশের নাগরিক হলে তারা প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। মূলত অং সাং সু চি যাতে প্রেসিডেন্ট না হতে পারে তার জন্যই রাখা হয়েছে এই ধারাটি। উল্লেখ্য, সু চির প্রয়াত স্বামী একজন ব্রিটিশ নাগরিক, তার দুই সন্তানেরও রয়েছে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব।
অতীতে সেনাসরকার সু চিকে দেশছাড়া করার চেষ্টা করেছে। গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন সু চি স্বামী আর দুই সন্তানকে বিদেশে রেখেও দেশ ছাড়তে রাজি হননি। এরপর তাকে কোণঠাসা করতেই এমন সংবিধান চালু করে জান্তা সরকার। নির্বাচনের জিতে সেই সূ চি আপোষের পথে যান। নিজের অনুগত দলীয় কর্মী ও একসময়ে ব্যক্তিগত গাড়িচালক থিন কিউকে করেছেন প্রেসিডেন্ট। সু চি স্টেট কাউন্সিলর নামক একটি নতুন সৃষ্ট পদে থেকে নেপথ্যে দেশ পরিচালনা করছেন।
নতুন ওই সংবিধানে পার্লামেন্টের শতকরা ২৫ ভাগ আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীর জন্য। এ কারণে দল ক্ষমতায় গেলেও সু চি রাতারাতি সংবিধান পরিবর্তনও করতে পারবেন না। এ জন্য তাকে অবশ্যই সেনাবাহিনীর সমর্থন লাগবে। দেশের সমগ্র প্রশাসনিক ব্যবস্থা সেনাবাহিনীর দখলে। সব গুরুত্বপূর্ণ দফতরে রয়েছে সাবেক সেনাকর্মকর্তা বা তাদের নিয়োগকৃত লোক। এসব কারণে দেশ পরিচালনায় কিছুটা হলেও হিমশিম খেতে হয় সু চি ও তার দলকে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আসেনি, মানবাধিকার পরিস্থিতি কিছটা উন্নত হলেও তা প্রত্যাশামতো নয়। মাদক উৎপাদন ও বণ্টন মহামারী আকার ধারণ করেছে। অবশ্য এসব বিষয়ে সরকার কতখানি আন্তরিক এমন প্রশ্নও তুলছেন সমালোচকেরা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার একটি প্রচেষ্টা লক্ষ করা গেছে সু চির মধ্যে।
সেনাবাহিনী ছাড়াও দেশটিতে উগ্র বৌদ্ধভিক্ষুদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতনের মূল হোতা এই উগ্র ভিক্ষুরা। কিন্তু সরকার কখনোই তাদের নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়নি। গত নির্বাচনের আগে এই ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর চাপে রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভিক্ষুরা চায়নি, তাই সু চির দল কোনো মুসলমানকে প্রার্থী করেনি তাদের দল থেকে। এদের সমর্থন হারানোর ভয়ে এমন চরম অন্যায় আবদার মেনে নিয়েছে এনএলডির মতো গণতান্ত্রিক দল। অথচ অতীতের সব নির্বাচনে দেশটির মুসলিম রাজনীতিবিদেরা প্রধান দলগুলো থেকে যোগ্যতা অনুযায়ী প্রার্থী হতেন। ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বাধার কারণে রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার বাতিলেও কোনো প্রতিবাদ করেনি দলটি। সেনাবাহিনী দেশের জনগণকে শোষণের পাশাপাশি এই উগ্র ভিক্ষুদের প্রশ্রয় দিয়েছে। ধর্মপ্রাণ জনগণকে দলে ভেড়াতে এটি ছিল সেনাশাসকদের একটি হঠকৌশল। সর্বশেষ রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন ও চার লাখ রোহিঙ্গাকে দেশছাড়া করা হয়েছে। সূচির সমর্থন নিয়ে সেনাবাহিনী জাতিগত নির্মুল অভিযান চালাচ্ছে।

অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র বিদ্রোহ
স্বাধীনতার পর সরকার গঠন ও রাষ্ট্র পরিচালনা নিয়েই শুরু হয় মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। ক্ষমতাদ্বন্দ্বের সাথে রয়েছে জাতিগত ও আঞ্চলিক গোষ্ঠিভিত্তিক সঙ্ঘাত। বেশ কয়েকটি অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রুপ স্বাধীনতা কিংবা স্বায়ত্তশাসন চায়। ১৯৩৯ সালে গঠিত কমিউনিস্ট পার্টি বার্মা স্বাধীনতার পর প্রথম সরকারবিরোধী সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে চীন সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে। পরবর্তীকালে দলটি নিষিদ্ধ হয় মিয়ানমারে। ১৯৪৯ তৎকালীন কারিন (বর্তমান কাইন) রাজ্যের স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে কারিন ন্যাশনাল ইউনিয়ন। গঠন করে কারিন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি নামে সামরিক গ্রুপ। জাতিগত কারিন সম্প্রদায়ের পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে এই সশস্ত্র লড়াই। একই গ্রুপের আরেকটি সংগঠন কারিন ন্যাশনাল ডিফেন্স অরগানাইজেশন কাইনের পাশাপাশি কায়াহ রাজ্যে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে। প্রাকৃতিক ও কৃষিজ সম্পদে পরিপূর্ণ রাজ্যটি তাদের সম্পদ ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ আনে সরকারের বিরুদ্ধে। বিদ্রোহ দমাতে এখানে হত্যা, গুম, ধর্ষণসহ চরম সহিংসতা করেছে সরকারি বাহিনী।

১৯৭৬ সালে স্বাধীনতার দাবি থেকে সরে এসে ফেডারেল রাষ্ট্রব্যবস্থার দাবি জানায় কারিন ন্যাশনাল ইউনিয়ন। সে দাবিতে এখনো অনড় এই গ্রুপটি। ১৯৯৫ সালে সরকারি বাহিনী গ্রুপটির সদর দফতরসহ বিভিন্ন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিলে জঙ্গলে আশ্রয় নেয় এই বিদ্রোহীরা। বর্তমানে এই গ্রুপটির সাথে মিয়ানমার সরকারের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর রয়েছে। প্রায় একই সময় পূর্বাঞ্চলীয় কারেনি (বর্তমান কায়াহ) রাজ্যে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে কারেনি আর্মি। তারাও স্বাধীনতা কিংবা স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন করছে। ২০১২ সালে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের আগ পর্যন্ত এই গ্রুপটি নিয়মিতই সশস্ত্র হামলা চালাত সরকারি বাহিনী ও স্থাপনায়।
তবে মিয়ানমারের সবচেয়ে শক্তিশালী বিদ্রোহী গ্রুপ হচ্ছে উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন প্রদেশের কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মি। ১৯৬১ সালে সরকারের সাথে বিরোধের সূত্র ধরে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে খ্রিষ্টানপ্রধান প্রদেশটি। সেনাবাহিনীতে কর্মরত জাতিগত কাচিন সম্প্রদায়ের লোকেরা বাহিনী ত্যাগ করে গড়ে তোলে পৃথক বিকল্প বাহিনী। শুরু হয় সরকারের সাথে রক্তক্ষয়ী সঙ্ঘাত। ২০১১ সালে এই গ্রুপটির সাথে সংঘর্ষে একসাথেই নিহত হয়েছে ২১১ সরকারি সৈন্য। বিভিন্ন সময় কাচিন বিদ্রোহীদের সাথে সরকারের যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও তা স্থায়ী হয়নি। কাচিন প্রদেশে সক্রিয় আছে আরাকান আর্মি (কাচিন) নামে আরেকটি বৃহৎ বিদ্রোহী সংগঠন। বর্তমানে সংগঠনটির প্রধান তাওং ম্রাত নাইং। পাশাপাশি আরাকান আর্মি সক্রিয় আছে রাখাইন ও শান প্রদেশ এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। আরাকান আর্মি (কাইন) নামক পৃথক সংগঠন সক্রিয় আছে কাইন রাজ্যে। এ দুটি সংগঠনই আরাকান জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিদ্রোহ করছে। এ ছাড়া রাখাইন রাজ্যে দীর্ঘ দিন বৌদ্ধ চরমপন্থী ও সরকারের নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে কেউ কেউ সশস্ত্র বিদ্রোহের সাথে জড়িত বলে সরকার অভিযোগ করছে। যদিও রোহিঙ্গাদের কোনো স্বীকৃত বিদ্রোহী সংগঠন নেই।
জাতিগত সঙ্ঘাতে জর্জরিত আরেকটি প্রদেশ শান। স্বাধীনতার আগে সায়ত্তশাসনের বিষয়ে থাই সীমান্তবর্তী প্রদেশটির শান নেতাদের সাথে চুক্তি হয়েছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা অং সানের। কিন্তু স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা সেই চুক্তি বাতিল করে। উল্টো আন্দোলরত শানদের ওপর চলে নির্যাতন। তবে তাতে দমে যায়নি শান সম্প্রদায়। বর্তমানে প্রদেশটিতে শান স্টেট আর্মি (সাউথ), শান স্টেট আর্মি (নর্থ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মিসহ ছয়টি পৃথক সশস্ত্র সংগঠন সক্রিয় রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইনের পর মিয়ানমারের যেকোনো রাজ্যের চেয়ে শানে বেশি অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা প্রায়ই সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা করছে। সব মিলে ছোট-বড় একুশটি বিদ্রোহী গ্রুপ সক্রিয় মিয়ানমারে। এর প্রায় সবই আঞ্চলিক কিংবা জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদের লক্ষ্যে সংগ্রাম করছে।

বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্ক
সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের সাথে সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের মধ্যে চলছে একটি নীরব প্রতিযোগিতা। মিয়ানমারের ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বই এর প্রধান কারণ। এশিয়ার বড় ও শক্তিধর দুটি দেশ ভারত ও চীনের সাথে মিয়ানমারের রয়েছে দীর্ঘ সীমান্ত। এ ছাড়া বিশ্ববাণিজ্যে ভারত মহাসাগরের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। মিয়ানমার থেকে ভারত মহাসাগরে প্রবেশের সরাসরি পথ আছে। দেশটির রয়েছে প্রাকৃতি সম্পদের প্রাচুর্যতা। এসব কারণেই দিন দিন বিশ্বরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে মিয়ানমার।
মিয়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে সবচেয়ে বেশি প্রভাব চীনের। রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে দেশটির সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর বৈরিতার সুযোগে চীন প্রভাব বিস্তার করেছে এখানে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সামরিক শাসকেরা যখন দেশ চালাতে হিমশিম খেয়েছে, সেটিকেই সুযোগ হিসেবে নিয়েছে চীন। অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তার সুযোগে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর করেছে।
তবে শুরু থেকেই চীনের সাথে উষ্ণ সম্পর্ক ছিল না মিয়ামারের। স্বাধীনতালাভের পর মিয়ানমারের কমিউনিস্ট পার্টির সশস্ত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সরকার। এ নিয়ে মিয়ানমারের সাথে বৈরিতা সৃষ্টি হয় চীনের। তবে ’৮৬তে কমিউনিস্ট বিদ্রোহীদের ওপর সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় চীন। এর বদলে তারা সম্পর্ক জোরদার করে সামরিক শাসকদের সাথে। ’৮৯ সালে বেইজিং ও রেঙ্গুন ‘উন্নয়ন আগে, পরে গণতন্ত্র’ নামক অদ্ভুত এক নীতি গ্রহণ করে। সামরিক শাসকেরাও সেই সুযোগটা নিয়েছে। কোটি কোটি ডলারের অর্থসাহায্য আর দেশব্যাপী সশস্ত্র বিদ্রোহ দমনে সামরিক সহায়তা চীনকে শক্ত স্থান করে নেয়ার সুযোগ দিয়েছে দেশটিতে। মিয়ানমারের অবকাঠামো নির্মাণ, শিল্প ও প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে চীন। সারা বিশ্বের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সামরিক শাসকদের বছরের বছর দেশ পরিচালনার মূলশক্তি ছিল চীনা-সহায়তা। চীনের প্রশ্রয় পেয়েই দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন কিংবা ভিন্ন মত দমনে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে দেশটি।
তবে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে পরিবর্তনের হাওয়া লাগতেই দেশটির সাথে সম্পর্ক জোরদারে সচেষ্ট হয় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় দেশগুলো মিয়ানমারকে নিজেদের বন্ধু করতে উঠেপড়ে লাগে। চলতি দশকের শুরু দিকেই ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসতে থাকে রাজনৈতিক ধারায়। সু চিকে মুক্তি দিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ফেরার আভাস দেয় সরকার। পরিবর্তন আসন্ন বুঝতে পেরে ২০১২ সালে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে প্রথম বিদেশসফরেই মিয়ানমার যান বারাক ওবামা। কয়েক দশক ধরেই চীনকে মোকাবেলায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নিজেদের প্রভাব বাড়াতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। তার অংশ হিসেবে মিয়ানমারের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়ায় দেশটি। ধীরে ধীরে শুরু হয় সামরিক শাসকদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া। পশ্চিমা ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করার পথ খুঁজতে থাকে মিয়ানমারে। এরপর গত বছর সু চির গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর আরো খুলে যায় দুই দেশের সহায়তার দ্বার। সু চি সরকারও চীনের ওপর এককভাবে ভরসা না করে বিশ্বব্যাপী মিত্রতা ছড়িয়ে দিতে আন্তরিক হয়। সর্বশেষ বারাক ওবামা ক্ষমতা ছাড়ার কিছু দিন আগে মিয়ানমারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন।
একই রকমভাবে মিয়ানমারের দিকে ঝুঁকেছে ভারত। গত আগস্টে নয়াদিল্লি সফর করেন মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী থিন কিউ। এ সময় বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় দেশ দুটির মধ্যে। পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্য প্রসারিত করতে মিয়ানমার ভারতের জন্য চমৎকার একটি সুযোগ হিসেবে কাজ করবে। অন্য দিকে মিয়ানমারের উদ্যোক্তারা মুখিয়ে আছেন ভারতের বিশাল বাজার ধরার জন্য। সহযোগিতার নজির হিসেবে ভারত মিয়ানমারের সিত্তেয় বন্দর নির্মাণে সহযোগিতা দেয়। মিয়ানমারের সাথে সম্পর্কেও ক্ষেত্রে ভারতের যে শুধু বাণিজ্যিক লক্ষ্যই রয়েছে তা নয়; এখানে আছে আঞ্চলিক রাজনীতির জটিল সমীকরণ। ভারতের বৃহৎ শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশের প্রধান শর্ত হচ্ছে এশিয়ায় প্রভাব জোরদার করা এবং চীনকে মোকাবেলা করা। পাশাপাশি মিয়ানমারে চীনের সামরিক স্থাপনাগুলোও ভারতের জন্য উদ্বেগজনক। সে হিসেবে মিয়ানমারের সাথে মিত্রতা কিছুটা হলেও সুবিধাজনক অবস্থায় রাখবে ভারতকে। আঞ্চলিক সামরিক, রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতায় মিয়ানমার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে ধরণা করা হচ্ছে। চীন ইতোমধ্যেই শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সাথে লাভজনক বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। নেপালের সাথেও ভারতের চেয়ে চীনের সম্পর্ক ভালো। সে ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে আছে ভারত। তাই মিয়ানমারে একক চীনা আধিপত্যে ভাগ বসাতে পারলে তা কিছুটা হলেও জোরদার করবে ভারতের প্রভাব। তবে দীর্ঘ দিনের বন্ধু চীনের বিরাগভাজন হতে চায় না সু চি সরকার। সবার সাথে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্কের নীতিই গ্রহণ করেছে তারা।

সাম্প্রদায়িক সঙ্ঘাত ও সংখ্যালঘু নির্যাতন
সাম্প্রদায়িক সঙ্ঘাত ও সংখ্যালঘু নির্যাতনে বিশ্বে শীর্ষসারির দেশ মিয়ানমার। দেশটিতে সরাসরি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংখ্যালঘুদের উচ্ছেদ ও হত্যাকাণ্ড পরিচালনার মতো ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর যে বর্বর হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে তা ইতিহাসে বিরল।
দেশটিতে সরাসরি সরকারিভাবে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্মূল করার অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযানে কাজ করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হিটলারের নাৎসি বাহিনীর পরে সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সংখ্যালঘুদের এমন নির্যাতনের ঘটনা ইতিহাসে বিরল। নাগরিকত্ব অস্বীকার করে, অবৈধ বিদেশী আখ্যা দিয়ে বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে তাদের পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা চলছে। জাতিসঙ্ঘের মতে, রোহিঙ্গারা বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। অথচ ইতিহাস বলছে রোহিঙ্গারাই মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আরাকান বা রাখাইন রাজ্যের আদিবাসী।
১৯৮২ সালে জেনারেল নে উইন সরকারের সময়ে গৃহীত ‘বার্মিজ জাতীয়তা আইনে’ রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে অবহেলা আর বঞ্চনার শিকার রোহিঙ্গাদের ওপর সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হামলাা খড়গ নামে ২০১২ সালে। লাখ লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালায় জীবন বাঁচাতে। যারা পালাতে পারেনি জীবন দিয়েছে ধর্মান্ধদের হাতে। সে বছর জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় আদমশুমারিতে রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্ত না করে তাদেরকে ‘রাষ্ট্রহীন বাঙ্গালি মুসলমান’ হিসেবে আখ্যায়িত করে জান্তা সরকার। আর সর্বশেষ ২০১৬ সালের নভেম্বরে যা হয়েছে তাকে শুধু গণহত্যার সাথেই তুলনা করা যায়। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের নাম করে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধে নামে সেনাবাহিনী। নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ আর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় সেনাসদস্যরা। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া নারী ও তরুণীদের লাশ পাওয়া যায় রাস্তা কিংবা জঙ্গলের ধারে। বাড়িতে আগুন দিয়ে তার মধ্যে ছুড়ে ফেলা হয় অবুঝ শিশুদের।
রোহিঙ্গা ছাড়াও জাতিগত কারিন, চিন, খ্রিষ্টধর্মপ্রধান কাচিন জাতিগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক বৈষম্য ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। সব মিলে মোট ১৩৫টি জাতিগোষ্ঠীর বাস মিয়ানমারে। যার মধ্যে অনেকেই সংখ্যাগুরুদের বৈষম্যের শিকার।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!