ঢাকা অফিস-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত বামপন্থী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেটিকে বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা হিসেবে দেখছেন না বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ছাত্রলীগে এই ধরনের কাজই করে আসছে।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাপ্রবাহের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পরদিন বুধবার এ কথা বলেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটেছে তা আওয়ামী লীগের চরিত্র, এটা ছাত্রলীগের নতুন ব্যাপার নয়। তারা বহুবার শিক্ষকদের মেরেছে, ছাত্রদের মেরেছে।’
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিক্টেটরিয়াল যে অথরিটি তারা যখনি তাদের (ছাত্রলীগ) বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তখনি তারা (ছাত্রলীগ) হাতিয়ার নিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষের উপর আক্রমণ করেছে।’
দুপুরে বনানী কবরস্থানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবরে শ্রদ্ধা জানাতে যান বিএনপি মহাসচিব। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তারের পর চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া কোকো ২০১৫ সালের এই দিনে মালয়েশিয়ায় মারা যান।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে ঘেরাও কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলা ছাড়াও সরকারের ‘দমন নীতি’ নিয়েও কথা বলেন বিএনপি নেতা।
ফখরুল বলেন, ‘সরকার গণতন্ত্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, জনগণের ভোট দেওয়ার নূন্যতম অধিকার কেড়ে নিয়েছে।’
‘কথা বলা, লেখার ও সংগঠন করার সুযোগ নাই। রাস্তায় বের হওয়ার সুযোগ নাই। এমনকি খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিতে গেলে, আমাদের দলের তরুণরা যখন তাকে আদালতে নিয়ে যায়, নিয়ে আসে, তখন প্রতিদিন ৫০-৬০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
একটাই বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা- সরকারের উদ্দেশ্য বলে মনে করেন ফখরুল। বলেন, ‘আজকে এরা যতভাবে চেষ্টা করছে এই নির্বাচন যেন না হয়। তারা জানে, সত্যিকার অর্থে যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তাহলে এই সরকার কখনই আবার নির্বাচিত হয়ে আসতে পারবে না’
‘আমরা সুস্পষ্ট করে বলেছি যে নির্বাচনকালীন সময়ে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। যা ছিল (তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) এ দেশের মানুষ তা গ্রহণ করেছিল। তিনটি নির্বাচন এখানে হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া এ দেশের জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। যতই নির্যাতন করুন, গ্রেপ্তার করুন, হত্যা -গুম করুন, এ দেশের মানুষকে, জনগণের যে চাওয়া, নিরপেক্ষ সরকারের দাবি থেকে সরাতে পারবেন না। ’
‘আমরা আবারও বলছি এই অবস্থা চলবে না, চলতে দেওয়া হবে না’- এমন মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘দেশে, সমাজে রাষ্ট্রে তারা জোর করে খমতা দখলে রাখতে চায়। কিন্তু তারা তা পারবে না। এর অবসান হবেই। এ দেশের মানুষ নি:সন্দেহে তাদের পরাজিত করবে।’
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের আব্দুস সালাম, উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালি, আবদুস সালাম, সাংগঠনিক শামা ওবায়েদসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।