ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে আসা উজানের পানির ঢলে মুহুরী (মুহুরী-কহুয়া-সিলোনীয়া) নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৯ স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কের যান চলাচল। তলিয়ে গেছে দুই উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট। ভেসে গেছে কয়েক শতাধিক পুকুরে মাছ। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১৫টি গ্রামের হাজারো মানুষ।
জানা গেছে, গত রবিবার রাতে নদীর পানি বিপদ সীমার ১.৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিলো ও সোমবার সকালে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। প্রবল পানির তোড়ে মুহুরী নদীর ফুলগাজী ও পরশুরাম অংশে অন্তত ৬টি স্থানে ভেঙ্গে যায়। এতে দুই উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।
এদিকে রবিবার রাতে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ফুলগাজীর উত্তর দৌলতপুরের ৩টি স্থানে ও কিসমত ঘনিয়া মোড়া গ্রামে ২টি স্থানে ভেঙ্গে যায়। এতে উত্তর দৌলতপুর, বৈরাগপুর, সাহাপাড়া, উত্তর বরইয়া, ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, পূর্ব ঘনিয়া মোড়াসহ অন্তত সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজী বাজারের পশ্চিম অংশে শ্রীপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে ফুলগাজী উপজেলা সদরের প্রধান সড়কও তলিয়ে গেছে। এতে ওইসব এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
অপর দিকে মুহুরী নদীর চিথলিয়া অংশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪টি স্থানে ভেঙ্গে ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রোববার রাতে দূর্গাপুরের কালাম মেম্বারের বাড়ির পাশে ও দক্ষিণ শালধর সাবেক চেয়ারম্যানের জহিরের বাড়ির পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুইটি অংশ ভেঙ্গে দক্ষিণ শালধর, মালিপাথর, পাগলীরকুল, দুর্গাপুর, রতনপুর, রামপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিতে উত্তর ধনীকুন্ডা, মধ্যম ধনীকুন্ডা, উত্তর শালধর, রাজষপুর, নোয়াপুরসহ আরো বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, সোমবার সকালে ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি পানিবন্দি মানুষের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করেন।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার জানান, মুহুরী নদীর বাঁধের ভাঙ্গন কবলিত অংশগুলো মেরামতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন জানান, মুহুরী নদীর বাঁধের ভেঙ্গে যাওয়া অংশে পানি কিছুটা কমলে বাঁধ মেরামতে কাজ করা হবে। এছাড়া নতুন করে বাঁধের কোন অংশে যেন ভাঙ্গন না ধরে সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।