ফেনী
মঙ্গলবার, ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১:৩৯
, ১২ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

ফেনীতে কমে যাচ্ছে বন্যার পানি,জনদুর্ভোগ

ভারতীয় উজানের পানি ও টানা বর্ষণে বন্যায় কবলিত হয় ফেনী জেলার অধিকাংশ গ্রাম।এতে করে লাখলাখ মানুষ পানিবন্দী হওয়ার পাশাপাশি মানবেতর জীবন যাপন করছে।সরকারি হিসেবে ১ জনের মৃত্যু হলেও নিখোঁজ-মৃত্যু সংখ্যা আরও বেশি হবে।তবে এখন পর্যন্ত এসবের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।এদিকে ভারী বর্ষণ না হওয়ায় মংগলবার ফেনী জেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন গ্রামের অনেক অংশে পানি কমে গেছে।তবে এখনও প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি আছেন।এদিকে সড়কে যাত্রীবাহী যানবাহন না থাকায় জনদুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে।

সুত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে অতি ভারি বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের ঢলের কারণে ফেনী জেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বন্যায় পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার মানুষজন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং পরবর্তীতে ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলা আক্রান্ত হয়।এতে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ দুর্যোগের শিকার হয়েছে। তন্মধ্যে ১ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। অবশিষ্ট লোকজন বিভিন্ন উপজেলায় উঁচু ভবনসমূহে ও ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যাকবলিতদের জরুরি চিকিৎসায় জেলায় ১ টি ও উপজেলায় ৬টি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এছাড়া বেসরকারিভাবে ৭ টি হাসপাতালে মেডিকেল ক্যাম্প চালু রয়েছে।

এদিকে বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার জন্য ফেনীর মুহুরী রেগুলেটরের ৪০টি স্লুইসগেট ও নোয়াখালীর মুছাপুরের ১৭টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে।বন্যার পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে ভেসে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ মুহূর্তে ফেনীতে সংকট দেখা দিয়েছে খাদ্য, পানি ও ওষুধ এর। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে গুরুতর মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হতেও পারে বলে আশংকা রয়েছে।

এছাড়া বন্যার কারণে গত কয়েকদিন ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকার পর মংগলবার থেকে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।বন্যা কবলিত এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় অচল হয়ে পড়ে জনজীবন।তবে ধীরে ধীরে এসব কিছুতে স্বাভাবিক গতি ফিরে পাচ্ছে।

তবে বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরি দল ও সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী টিম ফেনীর বন্যাকবলিত এলাকায় ডেংগি নৌকা ও স্পিডবোট নিয়ে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে।পাশাপাশি ত্রান সামগ্রী বিতরণেও সহায়তা করেন তারা।

কুমিল্লা লাকসাম থেকে ফেনীর পরশুরামে মেয়েকে দেখতে যাওয়া আনিসুর রহমান জানান,বন্যায় আক্রান্ত মেয়ে ও নাতি নাতনিদের খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য ফেনীর মহিপাল থেকে ফুলগাজী পরশুরাম সড়ক দিয়ে কোমর পরিমাণ পানিতে হেটেহেটে চলে যান।তবে একদিন থেকে ফিরে আসার সময় অধিকাংশ স্থানে পানি তেমন নেই বলে জানান।

জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, ফেনীতে বন্যার পানি কমতেছে ,ফলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে আরও পানি কমে যাবে।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!