ফেনী
মঙ্গলবার, ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১২:০৩
, ২১শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

ফেনীতে মোবাইল কোর্টের নিরপেক্ষতা নিয়ে মিষ্টারের সন্দেহ, সোহেল রানার চ্যালেঞ্জ

 

বিশেষ প্রতিনিধি-ফেনীতে ২৭শে সেপ্টেম্বর ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে মাদক ব্যবসার দায়ে পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সরোয়ার হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম নামের অপর এক মাদক ব্যবসায়ীকে ৬ মাসের কারাদন্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল রানা। এর পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ভ্রাম্যমান আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন যুবলীগ নেতা জিয়াউল আলম মিষ্টার। স্ট্যাটাসটি পোস্ট করার পরে এটি নিয়ে বেশ আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। মিষ্টারের সমর্থকরা তার এ স্ট্যাটাসকে সমর্থন করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। অন্যদিকে ওইদিন রাত ১১টার দিকে মিষ্টারের এ স্ট্যাটাসকে চ্যালেঞ্জ করে ফেসবুকে ভ্রাম্যমান আদালতের নিরপেক্ষতার পক্ষে একটি স্ট্যাটাস দেন ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল রানা। এতে তার ভক্তরা তাকে সমর্থন জানিয়ে ন্যায় পরায়ণ বিচারক হিসেবে তার সুস্বাস্থ্য ও নেক হায়াত কামনা করাসহ ওই পোস্টে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

জানা যায়, ফেনীতে ভোক্তা অধিকার আইন বাস্তবায়ন, মাদক ও অনৈতিক কার্যকলাপ রোধে প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আসছে জেলা প্রশাসন। এতে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা মাঝে মধ্যে অংশ নিলেও বেশিরভাগ অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল রানা।

এসব অভিযানে অপরাধীরা আর্থিকভাবে দন্ডিত হবার পাশাপাশি কারাভোগের মত শাস্তি পেয়ে থাকেন। ফলে জনসাধারণ এসব অভিযানকে সাধুবাদ জানায়।

অপরদিকে সুযোগ সন্ধানীদের মাঝে মধ্যে এসব অভিযানের সমালোচনা করতে দেখা যায়। ফেনীতে জেলা প্রশাসনের চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে ২৭শে সেপ্টেম্বর ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে মাদক ব্যবসার দায়ে পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সরোয়ার হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম নামের এ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে ৬ মাসের কারাদন্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল রানা।

এ নিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর যুবলীগ নেতা জিয়াউল আলম মিষ্টার ‘ভ্রাম্যমান আদালত কি এবং কেন?’ শিরোনামে পোস্ট করা তার স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন – ‘‘ভ্রাম্যমান আদালতকে শ্রদ্ধা করেই বলছি কারো ইন্ধনে অনৈতিক কিছু করবেন না যা গতকালকে (২৭ সেপ্টেম্বর) অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটিয়েছিল তা সভ্য কোন সমাজ গ্রহন করতে পারেনা, কার ইশারায় এবং কেন আমরা সব জানি বুঝি। অতএব আইনের শাসন সমুন্নত রাখুন, আইনকে কারো হাতের ইশারায় চলার পুতুল করে রাখবেন না, আমরা রাজনীতি করি তার মানে এই নয় যে আমরা আইনের শাসনের মুখামুখি শুধু হব। আমার আইনের সহযোগিতা পাওয়া এবং করা এটা আমাদের মৌলিক আধিকার, রাজনীতি করে যে শুধু অন্যায় করে এমন ধারনা থেকে বেরিয়ে এসে রাজনীতিক ব্যক্তি যে সমাজের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা রাখে তা ও একটু মনে রাখবেন। গত কিছু দিনের কিছু ঘটনা যা ফেনীর রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতার সৃষ্টি অপপ্রয়াস যা অনুমেয়। অতএব আপনাদের অনৈতিক আইনের অপব্যবহার করা পরিহার করুন অন্যথায় গনতন্ত্রের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হবে…! এই দেশ মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে স্বাধীন করা; আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি!! ’’

অপরদিকে ওইদিন রাতেই ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল রানা মিষ্টারের এ সন্দেহকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নিরপেক্ষতার পক্ষে ফেসবুক আইডিতে দেয়া স্ট্যাটাসে বলেন, ‘‘মাদক ব্যবসায়ীদের কোন দল নেই; কোন মত নেই! এরা হানাদারের মতই আমাদের শত্রু! মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এই প্রজন্মের যুদ্ধ; রক্ত দিয়ে যুদ্ধে আছি! জিতি হারি- যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে লড়ে যাব! মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধের একজন সৈনিক হিসেবে জীবন হাতে নিয়েই লড়ি!! কথা দিয়ে না! মাদকবিরোধী অভিযানে যদি বিন্দুমাত্র (চুল পরিমাণ) কোন উদ্দেশ্য কেউ প্রমাণ করতে পারেন চাকরি ছেড়ে চলে যাব। এখানে সবটুকুই সাদা, তাই এত গায়ে লাগে! মানুষ কিন্তু সব জানে; সবাইকে চেনে! মাঠে দেখা হবে…’’

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!