শহর প্রতিনিধি-ফেনীর একসময়ের গডফাদার জয়নাল হাজারী এবং দ্য ডেইলী অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর ইন্ধনে একটি মহল ফেনীর রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে এমন দাবী করেছেন জেলা আওয়ামীলীগ। বুধবার বিকালে শহরের একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলটির জেলা সভাপতি আবদুর রহমান বিকম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১৩ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এবং ২১ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে ফেনীর কথিত গডফাদার জয়নাল হাজারীর শীর্ষ ক্যাডার আজহারুল হক আরজু ও ডাইল সাখাওয়াত সাংবাদিক সম্মেলন করে ফেনী জেলা আওয়ামীলীগের কিছু বিষয়কে দায়ী করে বক্তব্য প্রদান করেন। যা জেলা আওয়ামীলীগ দৃষ্টিগোচর হওয়ায় সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
এসময় তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসের জনপদ নামে খ্যাত ফেনী যাদের নেতৃত্বে বিশেষ করে আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ও নিজাম হাজারী এমপির নেতৃত্বে আজকে শান্তির জনপদে রূপান্তরিত হয়েছে। তাদেরকে জড়িয়ে আরজু ও সাখাওয়াত যে মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করেছে জেলা আওয়ামীলীগ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ফেনীতে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদের এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ও জেলা আওয়ামীলীগ বিষয়টি জাতির কাছে পরিষ্কার করেছে।
২০১৬ সালের পহেলা নভেম্বর সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ড, মাদক ব্যবসায় জড়িত ও ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করায় আরজুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। অনুষ্ঠিত দুটি সাংবাদিক সম্মেলনে আরজু ও সাখাওয়াত নিজেদের জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক পরিচয় দেয়। প্রকৃতপক্ষে তারা কখনোই জেলা যুবলীগের ওইসব পদে ছিলনা। বর্তমানে তারা কোন পদ পদবীতে নেই।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী সম্পাদিত দ্য ডেইলি অবজারভারে আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানীকর সংবাদ প্রকাশ করায় আওয়ামীলীগ ও সরকারের সুনাম নষ্ট হয়েছে। এ নিয়ে জাতীয় সংসদে ব্যাপক সমালোচনা করে সংসদ সদস্যগণ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে ইকবাল সোবহান চৌধুরীকে প্রধান আসামী করে মামলা করা হয়। যা বিচারাধীন রয়েছে।
অতীতের সন্ত্রাসের জনপদ ফেনী আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ও নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপির নেতৃত্বে শান্তি ও উন্নয়নের জনপদে পরিণত হয়েছে। এটিকে ব্যাহত করার জন্য বৃহিষ্কৃত ও জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামীলীগ নেতা জয়নাল হাজারী সাংবাদিক ইকবাল চৌধুরীর ইন্ধনে মাদক সম্রাট আরজু ও ডাইল সাখাওয়াত বিএনপি জামায়াতের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার বহরে হামলার ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সাংবাদিক সম্মেলনের এক মাস পরে ২১ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে আরজু সাংবাদিক সম্মেলন তারাই প্রতিচ্ছবি। আরজু ও সাখাওয়াতের সাংবাদিক সম্মেলন দুটির বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ। আমরা এসকল বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।
এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আরো বলেন, আমরা আশংকা করছি যে জয়নাল হাজারী গং ফেনীর রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে তাদের ও ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার জন্য যে কোন ধরনের রক্তপাতের ঘটনা ঘটিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের উপর দোষ চাপাতে পারে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সহযোগিতার মাধ্যমে আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের দিক নির্দেশনায় ও নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপির সহযোগীতায় শান্তি ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।
সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজ আহম্মদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি এডভোকেট আক্রামুজ্জামান, সহ সভাপতি এডভোকেট হাফেজ আহম্মদ, এডভোকেট প্রিয়রঞ্জন দত্ত, মাষ্টার আলী হায়দার, সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, ফেনী পৌর আওয়ামলীগের সভাপতি আয়নুল কবির শামীম, সাধারন সম্পাদক আবদুল করিম, সদর উপজেলা সভাপতি করিম উল্লা বিকম, পরশুরাম উপজেলা সাধারন সম্পাদক কামাল উদ্দিন মজুমদার, সোনাগাজী উপজেলা সাধারন সম্পাদক এডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, ফুলগাজী উপজেলা সাধারন সম্পাদক আবদুল আলীম মজুমদার, ছাগলনাইয়া উপজেলা সাধারন সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন, সাধারন সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, ফেনী পৌরসভার প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী,জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সালাহ উদ্দিন ফিরোজ, যুব মহিলা লীগের সভাপতি হাসিনা আক্তার নিঝুমসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।