ফেনী
শনিবার, ১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৬:৫০
, ১৭ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম:
রাজাপুরে হিলফুল নূর ফাউন্ডেশনের শীতবস্ত্র উপহার ফেনীতে বর্নাঢ্য আয়োজনে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত  ফেনী বড় মসজিদের এলইডি স্ক্রিনে ভেসে উঠলো আ.লীগ আবার ফিরবে,জয়বাংলা উপজেলা-পৌর কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে চরদরবেশ ইউনিয়ন বিএনপির আনন্দ মিছিল নিজ দলীয় ত্যাগী-নির্যাতিত কর্মীর পাশে থাকায় ষড়যন্ত্রের শিকার বিএনপি নেতা আহবায়ক কমিটি দিয়ে ৫ বছর পার ফেনীর বিএনপির ফাজিলপুরে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন নানা আয়োজনে ফেনী মুক্ত দিবস পালিত ঢাকাস্থ ফাজিলপুর যুব কল্যাণের জিপিএ ৫ সংবর্ধনা আ.লীগের রাজনীতি করার অধিকার আছে কিনা তা জনগণই ঠিক করবে-ফখরুল

ফেসবুকের নেশা কাটে না?

সাইফুল সামিন-আজকাল অনেককেই বলতে শোনা যায়, ‘ফেসবুকের নেশা আমার কাটে না।’

ফেসবুক আসলেই এক চরম নেশা। একবার এই নেশা কাউকে ধরলে আর ছাড়তে চায় না। খাওয়ার মাঝে ফেসবুক। পড়ার টেবিলে ফেসবুক। কাজের মাঝে ফেসবুক। কাজ না থাকলেও ফেসবুক। বুকের ভেতরে ফেসবুক। শয়নে-স্বপনে ফেসবুক।

একসময় এই নেশায় আমিও বুঁদ ছিলাম। অবস্থা এমন ছিল, ‘ফেসবুক ছাড়া আমার চলেই না।’ ফেসবুক দিয়ে শুরু হতো আমার সকাল। দিনভর ফেসবুকে ঢুঁ। সন্ধ্যার পর ফেসবুকে দিতাম ‘ডুব। গভীর রাতে চোখ ধরে আসত। তখন ফেসবুক থেকে মুখ তুলতাম। ঘুমের ঘোরে ভাবতাম, ইশ্‌, ফেসবুকে কত কী ‘মিস’ করলাম!

সত্যি বলতে কি, ফেসবুকের কারণে জীবনে অনেক কিছুই ‘মিস’ করেছি। বছরের পর বছর কত সময় এই ফেসবুকের পেছনে অকাতরে দিয়েছি, তার ইয়ত্তা নেই। একসময় নিজের ওপর নিজে বিরক্ত হলাম। এ কেমন কথা! সারাক্ষণ ফেসবুক আর ফেসবুক। এভাবে জীবন চলতে পারে না।

এক রাতে শপথ নিলাম—সকাল থেকে আর নয় ফেসবুক। সকাল-দুপুর ভালোই কেটেছিল। বিকেলে মনের মধ্যে শুরু হলো ‘প্যালপিটিশন’। ফেসবুক ছাড়া জীবন হয় নাকি! সন্ধ্যায় ঘরের ছেলে ঘরে ফেরে। ফেসবুকে লগইন করতেই মুখে রাজ্যজয়ের হাসি ফোটে। ওহ্, কত শত যুগ পরে ফেসবুকে!

এক মন বলে, ‘ফেসবুকে থাকো’। আরেক মন বলে, ‘ছাড়ো’। পাগল মন শেষ পর্যন্ত ফেসবুকেই থাকে। শপথ নেওয়া-শপথ ভাঙার নিত্য খেলা চলে। অনেক কষ্টে অবশেষে কিছু কৌশলে ফেসবুকের নেশা ছাড়ে।

প্রথমেই মোবাইলটাকে হাতের কাছ থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখি। মোবাইল কাছে থাকলে হাত নিশপিশ করে। ফেসবুকে উঁকি মারতে মন অস্থির হয়ে ওঠে।

দ্বিতীয় ধাপে ফেসবুক ব্যবহারের জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করি। নির্ধারিত সময়ের আগে-পরে ‘নো ফেসবুকিং’। ‘না’ মানে ‘না’। সময়টা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনি। স্ট্যাটাস, ছবি আপলোড, লাইক, কমেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করি।

কথায় আছে, ‘বিষে বিষ ক্ষয়’। ফেসবুকের নেশা কাটাতে অন্য ‘নেশা’ শুরু করলাম। নিয়ম করে গান, বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীতে মজে গেলাম। প্রিয় রবীন্দ্রসংগীতগুলোর মর্মার্থ বোঝার চেষ্টা করলাম। মনে হলো, আহা, জীবনের সব অনুভূতির প্রকাশই তো কবিগুরু তাঁর গানে গানে করে গেছেন। গানের পরের দাওয়াই সিনেমা। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি—যে সিনেমাই ভালো লাগে, তা দেখতে থাকি। গান-সিনেমা ভালো না লাগলে বই পড়ি। সব বই পড়ি না। যে বই টানে, শুধু তা-ই পড়ি। মন যা চায়, তাই লিখি। সিরিয়াস বিষয় থেকে শুরু করে মনের গহিনের খামখেয়ালি। দেশি-বিদেশি নিউজ সাইট ব্রাউজ করি। শিরোনাম টানলে খবরের ভেতরে ঢুকি।

এখন ‍দিব্যি টের পাই, ফেসবুকের নেশার মধ্যে আর নাই। এই যেমন, আজকাল সারা দিনেও ফেসবুকে না ঢুকলে পরান পোড়ে না। স্ট্যাটাস না দিলে মন খচখচ করে না। এখন মুচকি হাসি, আর নিজে নিজেই বলি, ফেসবুক আমায় চালায় না, আমি ফেসবুককে চালাই।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo