ফেনী
শুক্রবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ২:৫৪
, ২৭শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম:
গৃহযুদ্ধের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান ড. ইউনূসের ফেনীতে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ বাংলাদেশকে করিডোর দিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহবান বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি উত্তরা’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল ইয়াং স্টার ক্লাবের দোয়া ও ইফতার মাহফিল ফরহাদ নগর ইউনিয়ন বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিল ফসলি জমির মাটিকাটা রোধে গভীর রাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযান,এস্কেভেটর-ট্রাক জব্দ বালিগাঁওয়ে প্রতিপক্ষের বাধায় থমকে গেল ব্যবসায়ীর গৃহ নির্মাণ,হামলার অভিযোগ বিশিষ্টজনদের মিলনমেলায় পরিণত রামপুর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবের দোয়া ও ইফতার

ফেসবুকে সুন্দরী তরুণীর প্রেমের ফাঁদ অতঃপর

শহিদুল ইসলাম রাজী- তেইশোর্ধ্ব প্রবাসী ব্যবসায়ী নাজমুল। দুবাইয়ে রয়েছে তার অ্যালুমিনিয়াম ও গ্লøাসের ব্যবসা। অল্প বয়সে প্রচুর টাকার মালিক তিনি। দুবাই বসেই পরিচয় হয় ফয়সাল নামে এক যুবকের সাথে। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরেই অল্প দিনে দু’জনের মধ্যে গড়ে ওঠে সখ্য, যা পরিণত হয় বিশ্বাসে। কিন্তু ফয়সাল বিশ্বাসের ওই জায়গাটা দখল করেছে শুধু নাজমুলের টাকা হাতিয়ে নিতে; কিন্তু বিষয়টি বুঝতে পারেনি প্রবাসী তরুণ ওই ব্যবসায়ী। হঠাৎ একদিন নাজমুলের ফেসবুক আইডিতে রিকোয়েস্ট পাঠায় এক সুন্দরী তরুণী।

এরপর থেকেই একটু আধটু করে ফেসবুকে এসএমএস দেয়া নেয়া হয়। ধীরে ধীরে ওই তরুণীর সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে থাকে। এরপর শুরু হয় খুনসুটি আর হাসি-তামাশার কথা বলা। মন দেয়া নেয়া হয় ভার্চ্যুয়ালে। কখনো বা ফোনে কখনো বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে প্রাবাসী তরুণ ও বাংলাদেশী তরুণীর প্রেম-ভালোবাসা। বিশ্বস্ত ওই ফয়সালই তার সুন্দরী বান্ধবী ফারহানা আবেদিনকে দিয়ে ফেসবুকে টোপে প্রেমের ফাঁদ পাতে। আর সেই প্রেমের ফাঁদে পা দেয় প্রবাসী নাজমুল। প্রেমের টানে দুবাই থেকে চলে আসে ঢাকা। আর ঢাকায় এসেই অপহরণ হয় প্রবাসী ব্যবসায়ী নাজমুল। অপহরণকারী চক্রটি তার মুক্তিপণ হিসেবে স্বজনদের কাছে দাবি করে ত্রিশ লাখ টাকা। অবশেষে র্যাবের সহযোগিতায় এ যাত্রায় বেঁচে যান নাজমুল। ধরা পড়ে অপহরণ চক্রের মূল হোতাসহ দুইজন।
জানা গেছে, ফয়সাল নানাভাবে নাজমুলকে তার বান্ধবীর সাথে দেখা করার জন্য প্রলুব্ধ করে। এরপর গত ৮ আগস্ট দুবাই থেকে দেশে চলে আসেন ফয়সাল। এরপর থেকেই নাজমুলকে দেশে এনে অপহরণের পরিকল্পনা করে সে। একপর্যায়ে ফয়সালের প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে নাজমুল পরিবারের লোকজনকে না জানিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর বুধবার ঢাকায় আসে। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পরই ফারহানার অবস্থান জানিয়ে তার কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তোলা হয় তাকে। গাড়িতে ওঠা মাত্রই হাত-পা, মুখ বেঁধে ফেলা হয় নাজমুলের। এরপর শুরু হয় আসল দৃশ্যপট। চাওয়া হয় মুক্তিপণ বাবদ ত্রিশ লাখ টাকা। ভুক্তভোগীর চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় কোনো এক অজানা স্থানে। পরে মুক্তিপণের খবর পেয়ে ভুক্তোভোগীর স্বজনেরা র্যাব-২ কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

র্যাব জানায়, তাদের কাছে অভিযোগ আসে ত্রিশ লাখ টাকার বিনিময়ে ভিকটিমকে ছেড়ে দেয়া হবে। টাকা না পেলে তাকে মেরে ফেলা হবে ভুক্তোভোগীর পরিবারের সাথে অপহরণকারীদের মোবাইল যোগাযোগে জানা যায়, নাজমুলকে ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে ফায়হার নামে এক ব্যক্তি পাঁচ থেকে সাতজন লোক নিয়ে বুধবার বিমানবন্দরের সামনের রাস্তা থেকে অপহরণ করে মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বাবর রোডের বি ব্লøকের ৩১/৬ নম্বর একটি নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে নাজমুলকে উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া কৌশলে অপহরণ চক্রের মূল হোতা ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে ফায়হার ও সহযোগী নিশাদকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
র্যাব-২ এর সিনিয়র এএসপি মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, ২০১০ সালে ফয়সালের মা লাভলী আক্তার গৃহকর্মীর কাজে দুবাই যান। পরবর্তীকালে ফয়সাল লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয়ে পড়ে এবং মাদকসেবনে জড়িয়ে পড়ে। ফলে গত মার্চ মাসে তার মা ছেলেকে দুবাই নিয়ে যায়। তবে দুবাই গিয়েও তার জীবনযাপনে পরিবর্তন আসেনি।

এ সময় দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী নাজমুলের সাথে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এরপর বান্ধবীকে দিয়ে প্রেমের টোপ ফেলে ফেসবুকের মাধ্যমে। এরপর ফুসলিয়ে নাজমুলকে ঢাকায় আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সাল র্যাবকে জানায়, নাজমুল দেশে আসার পরই পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক ফয়সাল নাজমুলকে বিমানবন্দর থেকে রিসিভ করে গাড়িতে উঠায় এই বলে যে, ফারহানা আবেদিন তার জন্য বাসায় অবস্থান করছেন। পরে পথে গাড়ি থামিয়ে তার অন্য সহযোগীদেরকে উঠিয়ে ভুক্তোভোগীর হাত, পা, চোখ, মুখ বেঁধে মোহাম্মদপুর বাবর রোডের বি ব্লক/৩১/৬ নং নির্মাণাধীন বাসায় এনে ভিকটিমের আত্মীয়স্বজনদের কাছে ত্রিশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এএসপি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানিয়েছে, তারা ইতঃপূর্বেও এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। এ ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে বলে জানান অপারেশন অফিসার র্যাব-২।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!