নিজস্ব প্রতিবেদক-‘আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি অশুভ শক্তি বর্বরোচিত হামলা করেছে। একটি সাম্প্রদায়িক শক্তি এ অপকর্মের অপচেষ্টা করেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট করেছে। এরা চাইছে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বিনষ্ট করতে।’
রোববার রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের দেখতে এসে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বিনষ্ট করতে চায়, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। এ হামলার সঙ্গে যারা জড়িত, যারা মঞ্চে ছিল, নেপথ্যে ছিল, তারা যতই প্রভাবশালী হোক, কেউ রেহাই পাবে না। প্রত্যককে বিচারের আওতায় আনা হবে। তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও গ্রেপ্তার হবে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, নাসিরনগর-রামুর ঘটনা এবং রংপুরের ঠাকুরপাড়ার ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা। এটি একটি ষড়যন্ত্রের অংশ।
হরকলি ঠাকুরপাড়ায় আসতে চেয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সে প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একই ফ্লাইটে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল এখানে আসতে চেয়েছিলেন বলে জেনেছি। তিনি যদি আমার সঙ্গে আসতেন, তবে আমি তাঁকে পাশে বসিয়ে আসতাম। তিনি এলে অনেক কথা হতো, চোখাচোখি হতো, ভাববিনিময় হতো, শুভেচ্ছা বিনিময় হতো। এটা আমি পজিটিভভাবে দেখতাম। কিন্তু উনি আসলেন না। নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে অন্য ফ্লাইটে এসেছেন বলে জেনেছি।’
হরকলি-ঠাকুরপাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ১১টি পরিবারকে ২৫ হাজার করে টাকা ও বাড়ি ভাঙচুর হওয়া ৭টি পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা এবং একটি মন্দিরকে ১০ হাজার টাকা করে সাহায্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিএম মোজাম্মেল হক, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।
হরকলি ঠাকুরপাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো ঘুরে দেখার পর ঠাকুরপাড়ায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সমাবেশে যোগ দেন তিনি।
১১ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের আটটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কোতোয়ালি, গঙ্গাচড়া ও তারাগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এ সময় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হন। আহত হয়েছেন সাত পুলিশ সদস্যসহ ২৫ জন।