জহির উদ্দিন মিশু-‘আমার ক্যারিয়ারে কখনো কোনো অনৈতিক সিদ্ধান্ত নেইনি। দল নিয়ে মালিকদের এমন চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত আমার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই হোটেল ছেড়ে চলে এসেছি।’ ২০১৬ সালের কথা। মাশরাফি ভক্তদের নিশ্চয়ই মনে আছে। সে বছর মাশরাফি বিন মুর্তজার অধীনে গ্রুপ পর্ব পার করতে না পারায় ফ্রাঞ্চাইজির সঙ্গে সম্পর্কটা শীতল হয়ে পড়ে টাইগারদের ওয়ানডে দলনেতার। যার প্রমাণ মিলে, যখন পঞ্চম আসরে মাশরাফিকে ছেড়ে দেয় কুমিল্লা।
ম্যাশকে সরিয়ে তামিম ইকবালকে দেয়া হয় নেতৃত্বের গুরুদায়িত্ব। সেই সুযোগে লুফে নেয় রংপুর রাইডার্স। হতাশ করেননি মাশরাফিও। তার ওপর যে আস্থা রেখেছে রংপুর, তার শতভাগ পূরণ করে দিয়েছেন তিনি। শুরুতে ধুঁকতে থাকা রংপুরের হাতেই উঠল স্বপ্নের শিরোপা। অথচ এই রংপুরের ফ্র্যাঞ্চাইজি তার আগে ফাইনাল দূরের কথা সেমির মঞ্চেও পা রাখেতে পারেনি। তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল ২০১৫ সালের প্লে অফে খেলা। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস এখন মনে মনে আফসোস করতেই পারে। কারণ তারা মানিক চিনতে বোধহয় ভুলই করল।
গত দুই আসরে নাফিসা কামালের দলেই খেলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ২০১৫ সালে কুমিল্লাকে চ্যাম্পিয়নও করেন মাশরাফি। কিন্তু গত আসরে নাফিসার সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিকালে ম্যাচ। নাফিসার সঙ্গে রাগারাগি করে সকালে হোটেল থেকে সোজা বাসায় চলে যান মাশরাফি! এ ঘটনায় তোলপাড় ক্রিকেট অঙ্গন।
পরে দলের আসল মালিক অর্থাৎ নাফিসার বাবা, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল পরিস্থিতি সামলান। মাশরাফি যোগ দেন দলের সঙ্গে। প্রচণ্ড মন খারাপ নিয়ে টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলো কোনোরকম খেলে কুমিল্লাকে গুডবাই জানান মাশরাফি। ঝামেলার পর যতদিন দলের সঙ্গে ছিলেন, ততদিন নাফিসার কামালের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি ম্যাশ। সেই থেকে দুজনের সম্পর্কটা এখনও ‘কঠিন’ হয়ে আছে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, যে দলকে (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস) ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো শিরোপা পাইয়ে দেন নেতা মাশরাফি। ওই দল থেকে মাশরাফিকে ছেঁটে ফেলা কতখানি বোকামি ছিল, হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে কুমিল্লা। তার উপর সেই মাশরাফির দল রংপুর রাইডার্সের কাছেই হেরে আসর ছাড়তে হয়েছে কুমিল্লাকে।