ফেনী
শুক্রবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:৫০
, ২৭শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম:
গৃহযুদ্ধের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান ড. ইউনূসের ফেনীতে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ বাংলাদেশকে করিডোর দিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহবান বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি উত্তরা’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল ইয়াং স্টার ক্লাবের দোয়া ও ইফতার মাহফিল ফরহাদ নগর ইউনিয়ন বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিল ফসলি জমির মাটিকাটা রোধে গভীর রাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযান,এস্কেভেটর-ট্রাক জব্দ বালিগাঁওয়ে প্রতিপক্ষের বাধায় থমকে গেল ব্যবসায়ীর গৃহ নির্মাণ,হামলার অভিযোগ বিশিষ্টজনদের মিলনমেলায় পরিণত রামপুর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবের দোয়া ও ইফতার

যেভাবে বদলে যায় মালয়েশিয়া

 
কথা ডেস্ক-রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদের আগ্রহ ছিল সুগভীর। জাতির উন্নয়নে তিনি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিযেছেন। সরকারি নীতি এবং বেসরকারি বিনিয়োগের মাঝে তিনি একটি সমঝোতা এবং সখ্য গড়েছেন। সরকারি মালিকানাধীন সংস্থাগুলোর বেসরকারিকরণ দ্রুত শিল্পায়নে সহায়ক হয়েছে। তিনি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ আর সহযোগিতায় বেসরকারি খাতকে লাভজনক পর্যায়ে নিয়েছেন এবং বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করেছেন।

বিশ্বব্যাংক আইএমএফ বা দাতা সংস্থার পরামর্শ এড়িয়ে নিজের চিন্তা-চেতনায় দেশের জন্য যা মঙ্গলকর তাই করেছেন মাহাথির। বহুধাবিভক্ত দেশটিতে রোপণ করেন ঐক্যের বীজ। ১৯৭৮ সালে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করে তিনি দেশের প্রত্যেকের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির ব্যাপারে মনোযোগী হন। এ লক্ষ্যে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ ছিল- আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে আনা এবং বিনিয়োগকারীদের সর্বাধিক সহায়তা নিশ্চিত করা। যাতে আইন-শৃঙ্খলার অস্বাভাবিকতায় কেউ ভীতসন্ত্রস্ত না হয়। দেশি অথবা বিদেশি বিনিয়োগকারী যেন আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় না পড়েন। প্রত্যেকে যেন বিনিয়োগকৃত সম্পদ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন। কর্মীদের উশৃঙ্খলতায় যেন কোনোভাবে উৎপাদন বিঘ্নিত না হয়। দুর্নীতির কালো থাবা যেন উৎপাদন ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি না করে। তার বলিষ্ঠ পদক্ষেপ মালয়েশিয়াকে বাণিজ্যবান্ধব রাষ্ট্রে পরিণত করে।

মাহাথির ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেন সরকারি জমি। যখন বিতরণযোগ্য জমি আর ছিল না, তখন বিশ্বখ্যাত রাবার পণ্য প্রস্তুতকারক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানকে জনমানুষ বিহীন দুর্গম রাবার বনাঞ্চলে আহ্বান জানান। বিদেশি পুজি বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন দেশে যে কঠোর শর্ত আরোপ করে উৎপাদন আর ব্যবসার নামে, মালয়েশিয়ার তা দেখা যায়নি। কারণ মাহাথিরের ভাষায় মালয়েশিয়ার টেবিলের ওপর দুর্নীতির মাত্রা কম। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানানোর উদ্দেশ্য ছিলো এ থেকে সরকার যদি আর্থিকভাবে লাভবান নাও হয় তবু তারা কিছু মনে করবে না যদি শ্রমিকরা কাজ পায়। সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা দিয়েছে, সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে। এই বিনিয়োগের ফলে মালয়েশিয়া লাভবান হয়েছে, শ্রমিকরা দক্ষ হয়েছে, ব্যবস্থাপনার মান বেড়েছে, অনেকে নতুন পণ্য প্রস্তুত করতে শিখেছে।

মাহাথির মন্ত্রীদের কাছে ব্যবসায়ী সমাজের সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়মিত সংলাপ চালাতনে তিনি। তাদের অভিযোগ ও প্রস্তাব শুনে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতেন সবকিছু। তিনি রাজধানী শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত অত্যন্ত প্রশস্ত সড়ক নির্মাণ করেছেন। যা কখনো ঘন জঙ্গল, কখনো বিস্তীর্ণ মাঠ, কখনো নদী বা খালের ওপর দিয়ে ব্রিজ আকারে চলে গেছে। সে সময় দেশবাসীও মস্তবড় পাগলামি মনে করেছে, অনেকেই হাসাহাসিও করেছে। কিন্তু সড়কের নির্মাণ সমাপ্ত হলে আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ ধরা দেয় মালয়েশিয়ার জনগণের কাছে।

মাহাথির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করেছিলেন। উন্নয়নের নামে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কার্যক্রমকে পাত্তা না দিয়ে তিনি নতুন ও ব্যতিক্রমী ধারা চালু করেন। মাহাথির বলেছিলেন, পর্যটন খাতে উন্নয়ন করতে হলে পর্যটকদের জন্য আরামদায়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা দরকার। এমন পরিবেশ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। বিদেশি বিনিয়োগের জন্য চাই স্থিতিশীল পরিবেশ। অস্থির দেশে কেউ বিনিয়োগ করে না। রাজপথের বিক্ষোভ উন্নত দেশের উন্নয়নও থামিয়ে দেয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকবেই। কিন্তু সেসব সরিয়ে রেখে, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত দেশের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে একযোগে কাজ করা।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!