ফেনী
শুক্রবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১০:৩৯
, ২৭শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
শিরোনাম:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ কিলোমিটার যানজট গৃহযুদ্ধের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান ড. ইউনূসের ফেনীতে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ বাংলাদেশকে করিডোর দিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহবান বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি উত্তরা’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল ইয়াং স্টার ক্লাবের দোয়া ও ইফতার মাহফিল ফরহাদ নগর ইউনিয়ন বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিল ফসলি জমির মাটিকাটা রোধে গভীর রাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযান,এস্কেভেটর-ট্রাক জব্দ বালিগাঁওয়ে প্রতিপক্ষের বাধায় থমকে গেল ব্যবসায়ীর গৃহ নির্মাণ,হামলার অভিযোগ

রোহিঙ্গা নিয়ে নজিরবিহীন সংকটে দেশ-প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক-প্রধানমন্ত্রীও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক সহায়তা দেওয়া এবং তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ এক নজিরবিহীন সংকটের মুখোমুখি। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও শান্তিপূর্ণ উপায়ে এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সফল হবে।

বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে মৌলভীবাজার-২ আসনের সাংসদ আবদুল মতিনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হওয়ার পর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সামরিক অভিযান ও সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখানকার পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর। দুই মাস সময়ের মধ্যে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে ১০ লাখের বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হলেও তাদের দীর্ঘকাল বাংলাদেশে রাখা সম্ভব নয়। রোহিঙ্গা সমস্যার মূল উৎপত্তি মিয়ানমারে। এর সমাধানও সে দেশকে করতে হবে।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সরকারের বিভিন্ন কূটনৈতিক উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরানোর লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মহলের জোর সমর্থন আদায়ে বাংলাদেশ সফল হয়েছে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়াটা বাংলাদেশের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের নাম আজ বিশ্বনেতাদের কণ্ঠে গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে।

তাঁর বক্তব্য ধর্তব্যে নিই না
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কক্সবাজার সফরের সময় অভিযোগ করেছেন, সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী।
জবাবে খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর (খালেদা) বক্তব্যকে আমি ধর্তব্যে নিই না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামে কথা আছে, পাগলে কিনা কয়, ছাগলে কিনা খায়। চক্ষু থাকতে যে অন্ধ হয়, তাকে দেখাবে কে? দেখেও যে দেখতে পায় না, তাকে দেখানোর কিছু নেই। এটা হচ্ছে অনুভূতির ব্যাপার। এটা হচ্ছে বোধ, বোধটা আছে কি না, সে-ই ব্যাপার।’

খালেদা জিয়ার কক্সবাজার যাওয়ার সময়কার বিবরণ তুলে ধরে এর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) সেখানে যেভাবে সাজসজ্জা নিয়ে ঢোলডগর, হাতিঘোড়া সব নিয়ে গেলেন! উনি দুর্গত মানুষকে দেখতে গেলেন, নাকি কোনো বরযাত্রী হিসেবে নিলেন, না অন্য কোনো কারণে গেলেন, তা আমার কাছে বোধগম্য নয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক সহায়তা নয়, বরং বিএনপির দৃষ্টি ছিল ‘শোডাউন’ করার দিকে। মানবিক কারণে সহযোগিতা করার অভ্যাস তাদের নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ সব সময় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দুর্গত মানুষের পাশে থাকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) যে এটা ব্যর্থ দেখছেন, যিনি সব কাজে ব্যর্থ হন, তিনি তো ব্যর্থতা দেখবেন। ব্যর্থতা ছাড়া সফলতার দেখার মতো মানসিকতা তো তাঁর নেই।’

খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যাটা তো তাদেরই সৃষ্টি। তাঁর স্বামী (জিয়াউর রহমান) এটা সৃষ্টি করে গেছেন। বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য হচ্ছে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা।’

উসকানি বরদাশত করা হবে না
নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পর ১৯৭৮ সাল থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টি হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলেও এ সময় থেকে সমস্যা শুরু হয়। এখানে অনেক উসকানিদাতা আছে তাতে সন্দেহ নেই। সরকার এটা খুঁজে বের করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা কোনো ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না। এটি বরদাশত করা হবে না। উসকানিমূলক কাজে যারা জড়িত হবে এবং যারা তাদের পেছনে থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ২৭ হাজার ৭৯৭ জন রোহিঙ্গাকে নিবন্ধন করা হয়েছে।

আবদুর রহমান বদির প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, টেকনাফের ৫টি ইউনিয়নের ১৫ হাজার মানুষের খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা সরকার করবে। রোহিঙ্গাদের কারণে সেখানকার গাছপালা নষ্ট হয়েছে। স্থানীয় লোকজন পাহাড়ে আবাদ করতে পারছে না। সেখানকার স্থানীয় জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে দরিদ্রদের কষ্টের সীমা নেই।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!