ফেনী
মঙ্গলবার, ১২ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ১১:৫৮
, ৯ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

স্থায়ী ক্যাম্পাস না হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ

 

ঢাকা অফিস-আইন না মানা ৪৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এবার লাগাম টানতে যাচ্ছে সরকার। স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি বন্ধ করতে বলা হয়েছে।

বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের আগামী জানুয়ারি থেকে ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামী বছরের জুনের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার আলটিমেটাম দিয়ে সরকার বলেছে, না গেলে জুলাই থেকে ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জিন্নাত রেহানা স্বাক্ষরিত সরকারের এই নির্দেশনা ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা তদারকি করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানকে অনুরোধ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে সরকারের দফায় দফায় সময় বাড়ানোর পর এমন আলটিমেটাম এলো। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী সাময়িক সনদের মেয়াদোত্তীর্ণ ৪৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরসংক্রান্ত গঠিত কমিটির সভা শেষে গত মাসে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামী জানুয়ারি থেকে ছাত্র ভর্তি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি কিনলেও এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজ শুরু করেনি। আগস্টে মন্ত্রণালয় সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছে, অনুমোদিত নয়টি প্রোগ্রামের মধ্যে পাঁচটির শিক্ষা কার্যক্রম ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে হবে। এ ছাড়া জানুয়ারি থেকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে এসব প্রোগ্রামে ছাত্র ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে। স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি কিনলেও গত আগস্টের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু করেনি এমন কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে সতর্কবার্তা দিয়ে সরকার বলেছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারলে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে। এ তালিকার মধ্যে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজিকে আটটি প্রোগ্রামে, মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০টি প্রোগ্রামসহ আরও পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে জানুয়ারি থেকে ভর্তি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস তুরাগের নিশাতনগরে হলেও মোহাম্মদপুরের শ্যামলীতে বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সূত্রমতে, এখানে আটটি প্রোগ্রাম পরিচালিত হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারলে জানুয়ারি থেকে এসব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ তালিকায় আরও রয়েছে : রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, বগুড়ার পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালিত হলেও আগস্টের এক নির্দেশনায় সরকার বলেছে নির্ধারিত জমি আগামী জুনের মধ্যে রেজিস্ট্রিপূর্বক হস্তান্তর করতে হবে। অন্যথায় আগামী জুলাই থেকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে। এ তালিকায় দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটিও রয়েছে। চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়কে গত ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে আগস্ট থেকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে নতুন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি বন্ধ রাখতে বলা হয়।

চট্টগ্রামের একটি বিশ্ববিদ্যালয় ধানমন্ডির সেন্ট্রাল রোডে আউটার ক্যাম্পাস পরিচালনা করে আসছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শাখা ক্যাম্পাস বন্ধ করে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ আরও কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে সতর্কবার্তা দিয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে গত অক্টোবর থেকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি বন্ধ রাখতে বলেছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী যথাসময়ে নিজস্ব জমিতে ক্যাম্পাস পরিচালনার জন্য সরকার বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ বার্তাও পাঠিয়েছে।

অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ছাত্র ভর্তি বন্ধ করতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আইন মেনে চলছে। কিন্তু দিনের পর দিন অনিয়ম করে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারবে না।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo