চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফেনীর ফায়ার ফাইটার সালাউদ্দিন কাদের সবুজ ও বিএম কন্টেইনার ডিপোর শিফট ইনচার্জ শাহাদাত মজুমদার মারা যান। সোমবার দুপুরে ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের মাছিমপুরে সবুজ ও ফুলগাজি উপজেলার আনন্দপুরে রোববার রাতে শাহাদাতের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষের ঢল নামে। পরে তাদেরকে নিজ নিজ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় তাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের কর্মক্ষম ছেলেদের মৃত্যুতে তাদের পিতা মাতা বাকরুদ্ধ । নিহত সবুজ ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের মাছিমপুর গ্রামের মাস্টার মো. ইউসুফের ছোট ছেলে। তার এক মেয়ে ও ছেলে রয়েছে। এদিকে নিহত শাহাদাত ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের আমিন উল্লাহ মজুমদারের ছেলে। তার আড়াই মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
পরিবার ও স্বজনরা জানায়, সবশেষ ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসেন সবুজ। শনিবার রাত ৯টায় স্ত্রী মর্জিনা আক্তারের সঙ্গে কথা হয়। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ফায়ার ব্রিগেডের ইউনিটের সঙ্গে ডিপোতে উদ্ধারের কাজে যোগ দেন। বিস্ফোরণের পর থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।রোববার দুপুরে স্বজনরা জানতে পারেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে তার মরদেহ রয়েছে। ফায়ার ফাইটার সবুজ ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে সোনাগাজী ফায়ার স্টেশনে যোগদানের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। গত ৩ জুন তিনি ছুটি শেষে কাজে যোগ দেন।
শাহাদাতের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, দুই ভাই এক বোনের সংসারে শাহাদাত মেঝ। পড়াশোনা করে আয়ের আশায় ওমান পাড়ি জমান। প্রায় ৩ বছর পর দেশে ফিরে সীতাকুন্ড বিএম কন্টেইনার ডিপোতে শিফট ইনচার্জের চাকুরী নেন। ঘটনার দিন তিনি দুইদিনের ছুটি শেষে বাড়ি থেকে সীতাকুন্ড যান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। সীতাকুন্ডে বিষ্ফোরণে অন্য সবার মতো তার পরিবারে মূহুর্তে সব যেন শেষ হয়ে যায় তার পরিবারের। ছেলের মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েছেন মা-বাবা।পরিবারের কর্মক্ষম বড় ছেলেকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ, পাগল প্রায় তারা। শোকে কাতর পরিবারের অন্যান্য স্বজনেরাও। বাড়িতে এখন শুধুই শোকের মাতম। গভীররাতে তাঁরা শাহাদাতের মৃত্যুর খবরটা জানতে পারেন। মৃত্যুর খবরে এলাকার মানুষের মধ্যেও শোকের ছায়া নেমে এসে।
নিহত শাহাদাতের চাচাতো ভাই সাজ্জাদ ছিদ্দিকী মজুমদার হৃদয় জানান, তার চাচা দুলাল মজুমদার ও চাচি দীর্ঘদিন অসুস্থ। চাচাতো ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে তিনিও কর্মস্থল থেকে বাড়িতে ছুটে এসেছেন। পরিবারের আহাজারীতে এলাকার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। তার মৃত্যুর খবরে এলাকার লোকজন তার বাড়ীতে ভীড় জমায়।