ফেনী সদর উপজেলার মোটবীতে অচেতন করে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনায় যুবলীগ নেতা সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত এক আসামী দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের মহিপাল থেকে স্বর্ণালংকার ও টাকা লুটের মামলায় আনোয়ার হোসেন মানিক (৪৩) কে গ্রেফতার করা হয়। মোটবী ইউনিয়নের দুলামিয়া হাজী ভুঞা বাড়ির মো. নুরুন নবীর ঘরে গত ১৬ জুন কৌশলে খাবারের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
এতে পরিবারের সদস্যরা রাতের খাবার খেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে ঘরে ঢুকে ২৬ ভরি স্বর্ণ, নগদ ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল ফোনসহ ১৬ লাখ ৮৯ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। একই বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা মো. রবিউল হক ভুঞার ঘরের জানালা দিয়ে খাবার সাথে নেশাজাতিয় দ্রব্য মিশিয়ে দেয়। খাবার পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে পড়লে পরে ঘরে ঢুকে আড়াই ভরি স্বর্ণ, নগদ ৫৮ হাজার ৫শ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরদিন সকালে উভয় পরিবারের সদস্যরা ঘুম থেকে না উঠলে আশপাশের লোকজন এসে দেখে তারা অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাদেরকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় আবদুল হকের ছেলে মো. নুরুন নবী বাদি হয়ে ১৮ জুন ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মাঈন উদ্দিন ভূইয়া গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই বাড়ির সিরাজ মিয়ার কেয়ারটেকার জাহিদ শেখ (৪০) কে সোমবার বিকালে লস্করহাট থেকে গ্রেফতার করে। জাহিদ শেখ পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানার তোরাব আলীর ছেলে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার ঘর থেকে লুণ্ঠিত ১৭ হাজার ৫শ টাকা উদ্ধার করা হয়। জাহিদের তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে লালপোল থেকে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন (৩২) কে গ্রেফতার করা হয়। বেলাল মোটবী ইউনিয়নের প্রজা কাজি বাড়ির মো. সুলতান আহমদের ছেলে। বেলালকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সোমবার বিকালে আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
একইদিন বিকালে জাহিদকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহর আদালতে হাজির করা হয়। জাহিদ আদালতে নিজে জড়িত থাকার স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে ও ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম প্রকাশ করে। সে দুলামিয়া হাজী বাড়ীর সিরাজ মিয়ার কেয়ারটেকার হিসাবে চাকুরী করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মাঈন উদ্দিন ভূইয়া জানান, এ মামলায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লুন্ঠিত মালামালের মধ্যে ১৮ হাজার ৫শ টাকা উদ্ধার করা হয়। অপর জড়িতদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।