ফেনী
বৃহস্পতিবার, ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৮:০৪
, ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনাম:

লেমুয়ায় সরকারদলীয়দের অবৈধ বালু উত্তোলনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে শতাধিক ঘর-বাড়ি

মাঈন উদ্দিন পাটোয়ারী: ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের নেয়ামতপুরে কালিদাস পাহালিয়া নদীর ভাঙ্গন রোধে স্থাপিত ব্লকে ফাটল ধরায় নদীগর্ভে শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। বাড়ী-ঘর হারানোর ভয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ৩ সেপ্টেম্বর ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট আবেদন করেছেন এলাকাবাসীরা।

মঙ্গলবার দুপুরে ওই এলাকা পরিদর্শনকালে এলাকাবাসী জানায়, কালিদাস পাহালিয়া নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে অন্তত ১০ পরিবার ভিটে মাটি হারিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। পরবর্তীতে আশপাশের ঘর-বাড়ি রক্ষায় নদী ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে পাথরের ব্লক বসানো হয়েছে।

কিন্তু ওই স্থান সংলগ্ন নদী থেকে ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ উদ্দিন নাসিমের প্রত্যক্ষ মদদে স্থানীয় মেম্বার জুলফিকার আলী ভুট্টুর নেতৃত্বে সরকারদলীয় একটি চক্র বালু উত্তোলনের ফলে ব্লকগুলো সরে গিয়ে ফাটল ধরায় মনির উদ্দিন ভূইয়া বাড়ি, হাজী আছমত আলী বাড়ি, দারোগা রবিউল হকের বাড়ি, মস্তু মিয়া মিয়া বাড়ি, খোরশিদ আলমের বাড়ি, আবদুল ওয়াহাব মিয়ার বাড়ি, নুরু মেস্তরী বাড়ি, আমির হামজা বাড়িসহ প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে থাকায় স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।

এ ছাড়া লেমুয়া-মমতাজ মিয়া সড়ক, মনির উদ্দিন ভূইয়া বাড়ির মসজিদ ও সরকারি ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেঁড়িবাধ ও নদীর তীরবর্তী ফসলি জমি বিলীন হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ইতিমধ্যে বেড়িবাঁধের বেশ কিছু অংশ ধসে গেছে। নেয়ামতপুর বেড়িবাঁধের দুই পাশে দুটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করছে চক্রটি। এর ফলে সেখানে গভীরে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসীরা নেয়ামতপুর গ্রাম, সরকারি বেড়িবাঁধ, লেমুয়া-মমতাজ মিয়া সড়ক, মসজিদ ফসলি জমি রক্ষায় অবৈধ বালি উত্তোলনকারিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে আবেদন করেন। এর পূর্বেও জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।

এর প্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরের জামান চৌধুরী বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন জব্দ ও ধ্বংস করে। ভ্রাম্যমান আদালতের কারণে কিছু দিন বন্ধ থাকার পর আবারো বালু উত্তোলন শুরু করেছে স্থানীয় অসাধু চক্রটি। এতে পাশে শতাধিক ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট ও মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।

এ ব্যাপারে নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি, জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয়রা।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ইতিপূর্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি দেখার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরের জামান চৌধুরীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!