ফেনী
বুধবার, ৩০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সন্ধ্যা ৭:২৯
, ৪ঠা সফর, ১৪৪৭ হিজরি

প্রতিবাদ করায় এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি

ফাজিলপুরে আ.লীগ নেতা হারুনের রমরমা মাদক ব্যবসা

ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুরে ওমর ফারুক হারুন নামে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ নেতা এখনও ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে।আ.লীগ সরকারের পতনের পর কূটকৌশল করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় নাবিদুল হোসেন ফাহিম নামে এক ছাত্রদল কর্মীসহ এলাকাবাসীকে পিটিয়ে গুরুতর আঘাত করে আওয়ামী লীগ নেতা হারুন ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা তেহজানসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা।এ বিষয়ে হারুনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করায় উল্টো হয়রানি করার জন্য ১৬ জন এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন হারুনের স্ত্রী জাহানা বেগম রিনা।এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মাদক ব্যবসায়ী হারুনের আলিশান বাড়ি।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ফাজিলপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের মৃত মনির আহম্মদের ছেলে ওমর ফারুক হারুন বিগত আ.লীগ সরকারের আমলে প্রকাশ্যে মাদকের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যায়।হারুনের মাদক ব্যবসার ফলে ফাজিলপুর ও পাশ্ববর্তী ছনুয়া ইউনিয়নের যুব সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে গেলেও এ নিয়ে তখন কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।মাদক ব্যবসার কারণে হারুনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে।আ.লীগ সরকারের পতনের পরেও বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করে এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে স্থানীয়রা আপত্তি জানান।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৯ এপ্রিল সকালে মজুমদার পাড়া দোকানের সামনে ছাত্রদল কর্মী নাবিদুল হোসেনের উপর মাদক ব্যবসায়ী হারুন গং আক্রমন করে।এ নিয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয়রা আলোচনা করার জন্য হারুনের বাড়িতে গেলে তখন এলাকাবাসীর উপরও হামলা চালায় হারুন ও পরিবারের সদস্যরা।

হারুনের ভাই হায়দারও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত।

এদিকে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে ১৫ এপ্রিল হারুনের স্ত্রী বাদি হয়ে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা (নং: ৫৭৪/২৫) দায়ের করেন।আদালত শুনানি শেষে মামলাটি ফেনী মডেল থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার আদেশ দেন।

স্থানীয়রা জানান,হারুন মাদকের ব্যবসা চালিয়ে জিরো থেকে হিরো হন।ফলে কাউকে তোয়াক্কা করেনা।ক্ষমতা আর অর্থের জোরে দেদারসে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন।

এ ব্যাপারে সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাজী সাঈদ জানান, ৩ টি বাড়ি নিয়ে আমাদের ছোট্ট সমাজ।এখানে মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় ফাহিম নামে ছাত্রদলের এক কর্মীকে হারুন কর্তৃক মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমিসহ আমাদের সমাজের ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হারুনের স্ত্রী।আমাদের সমাজ ছোট হওয়ায় আসামি হওয়া থেকে আর কোন পরিবার তেমন বাকি নেই।আমি একটি হাই স্কুলের শিক্ষক।ঘটনার দিন আমি অফিশিয়াল কাজে ঢাকায় ছিলাম।অথচ আমার বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজি, ভাঙচুর, হুমকির অভিযোগ এনে মামলা করে।আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।আমরা সমাজবাসী প্রশাসন, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের মাধ্যমে এ ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে মাদক কারবারীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।পাশাপাশি আমাদের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানাচ্ছি।

পুলিশ সুত্র জানান,হারুনের ভাই হায়দারের ছেলে তেহজান নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফাজিলপুর ইউনিয়ন কমিটির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক।তাকে সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে ছাত্র জনতার হত্যা চেষ্টা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়।

হারুনের ভাতিজা ছাত্র জনতার হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি তেহজান।

আওয়ামী লীগ নেতা হারুনের ঘনিষ্ঠ একটি সুত্র জানান, ঢাকায় গেলে হারুন আবার আইনজীবী পরিচয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করেন।তার প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকেই নি:স্ব হন।

অভিযোগের ব্যাপারে হারুনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ফেনী মডেল থানার ওসি সামছুজ্জামান জানান,মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে পুলিশ।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!