ফেনী
বৃহস্পতিবার, ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১০:২৩
, ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনাম:

ফাজিলপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে বৃদ্ধার রহস্যময় মৃত্যু : এলাকাবাসীর সুষ্ঠ তদন্তের দাবী

মাঈন উদ্দিন পাটোয়ারী: ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুরে ১ সেপ্টেম্বর ভোরে গলায় ফাঁস দিয়ে সুফিয়া বেগম (৭০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু নিয়ে রহস্য কিছুতেই কাটছেনা। ফলে সুষ্ঠ তদন্তের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী। সুফিয়া বেগম ওই এলাকার নাজিম উদ্দিন হাজী বাড়ির মৃত আবদুল মালেকের স্ত্রী।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ওই বাড়ির আব্দুল মালেকের তিন ছেলে ও এক কন্যা রয়েছে। কন্যা সাফিয়া আক্তার গোবিন্দপুরে স্বামীর বাড়িতে আর শাহজাহান নামে দ্বিতীয় ছেলে পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামে বসবাস করে। আর বড় ছেলে শাহাব উদ্দিন প্রকাশ বাদশা মিয়া ড্রাইবার ও ছোট ছেলে মিজানুর রহমান বাড়িতে আলাদা ঘর করে বসবাস করে আসছে। মালেকের স্ত্রী সুফিয়া বেগম ছেলেদের বিল্ডিং ঘরে না থেকে বড় ছেলের পাকের ঘরে থাকতো। বিভিন্ন সময়ে পারিবারিক বিষয় নিয়ে সুফিয়া বেগমের সাথে পরিবারের লোকজনের সাথে প্রায় ঝগড়া হতো। এ নিয়ে কয়েকদফা শালিসি বৈঠকও হয়েছে বলে বাড়ীর লোকজন জানায়।

সুফিয়া বেগমের নাতনী সালমা আক্তার জানান, ২৭ আগস্ট সোমবার সকালে তার দাদী বাড়ি থেকে বের হয়ে বাবার বাড়ি শিবপুর কেরামত আলী মাস্টার বাড়ীতে চলে যায়। ১ সেপ্টেম্বর ভোরে তাদের ঘরের কোনে গলায় ফাঁস দিয়ে মৃতুর সংবাদের মাধ্যমে সে জানতে পারে যে, তার দাদী আগের দিন বাড়িতে এসে প্রতিবেশী সাবুদা খাতুনের ঘরে ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওইদিন বৃদ্ধার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় তাঁর বড় ছেলের ঘরের কোণে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ দেখা যায়। কিন্তু গলায় ফাঁস দিয়ে বৃদ্ধা আত্মহত্যা করেছে বলে মনে হচ্ছে না। আলামতে দেখা গিয়েছে, তাকে হত্যা করে লাশটি ঘরের কোণে দাড়ানো অবস্থায় ঝুলিয়ে রাখা হয়।
সমাজের সর্দার বেলায়েত হোসেন জানান, ঘটনার পর বাহিরের লোকজন দিয়ে পুলিশকে সাক্ষ্য দেয়া হয়েছে। যে ছেলে ১২ বছর ধরে মাকে স্বীকার করেনি। সে ও তার পরিবার পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তিনি এ বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানান।

বৃদ্ধার বড় ছেলে বাদশা মিয়া ড্রাইভার জানান, তার মা সুফিয়া বেগম মানসিক সমস্যায় ছিলেন। ছোট খাটো বিষয় নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হলে তিনি প্রায় আত্মহত্যা করবে বলে ভয় দেখাতেন।

তবে এ ঘটনায় বৃদ্ধার বড় ছেলের স্ত্রী খালেদা আক্তার ও কন্যা আসমা আক্তার জড়িত থাকতে পারে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবী করেন।
বোগদাদিয়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মাঈন উদ্দিন ভূইয়া জানান, খবর পেয়ে ওইদিন দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেন। বৃদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ হওয়ায় পরিবারের অনুরোধ উপেক্ষা করে তিনি ময়না তদন্তের জন্য আধুনিক ফেনী সদর হাসপাতাল মর্গে লাশ প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় ওইদিন দুপুরে বৃদ্ধার বড় ছেলে শাহাব উদ্দিন বাদশা মিয়া ড্রাইভার বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা গেলে সে আলোকে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!