দেশে করোনার পরীক্ষা কমলেও শনাক্তের হার কমছে না। বাড়ছেই শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। পরীক্ষার ফি নির্ধারণের পর থেকেই নমুনা পরীক্ষা ১১ থেকে ১৫ হাজারের মধ্যে ওঠানামা করছে। সর্বোচ্চ শনাক্তের হার প্রায় ২৫ শতাংশও হয়েছে ১৩ই জুলাই। দেশে মোট শনাক্তের অর্ধেকের বেশি রাজধানীতে। ঢাকা সিটিতে এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৯৯ হাজার ৯৫২ জন। যা মোট আক্রান্তের ৫২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। দেশে মোট ২ হাজার ৪২৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
এরমধ্যে রাজধানীতেই মারা গেছেন ৬১৮ জন। দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৯০ হাজার ৫৭ জন। বিভাগগুলোর মধ্যে ঢাকা বিভাগে মোট আক্রান্তের ৬৭ শতাংশের উপরে। এ বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ৫৭৫ জন। যা মোট শনাক্তের ৬৭ দশমিক ১২ শতাংশ। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ১৬৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।১৪ই জুলাই পর্যন্ত করোনায় রাজধানী ছাড়া ঢাকা বিভাগে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৬২৩ জন। এই বিভাগে মোট মারা গেছে (ঢাকা সিটি ও অন্যান্য জেলাসহ) ১ হাজার ২০৬ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে মোট ৩ হাজার ৮১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ বিভাগে মারা গেছেন ৫৮ জন। ২৮ হাজার ১৮১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগে। এ বিভাগে ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ৬৩৬ জন।
রাজশাহী বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮ হাজার ৮৫৪ জন। বিভাগটিতে মারা গেছেন ১২১ জন। রংপুর বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ২০৭ জন। এ বিভাগে মারা গেছেন ৭৪ জন। খুলনা বিভাগে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৯৫ জন। এ বিভাগে মারা গেছেন ১৩২ জন। বরিশাল বিভাগে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মোট ৪ হাজার ২১৭ জন। এ বিভাগে মারা গেছেন ৯১ জন। সিলেট বিভাগে ৫ হাজার ৭১২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এ বিভাগে মারা গেছেন ১০৬ জন।
গতকাল করোনা নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরো ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ হাজার ৪২৪ জনে। নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৬৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত হলেন ১ লাখ ৯০ হাজার ৫৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৯১০ জন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ২২৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৯৮৮টি নমুনা সংগ্রহ এবং ১৩ হাজার ৪৫৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ৬৬ হাজার ৪০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৪ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের ২৩ জন পুরুষ এবং ১০ জন নারী। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯১৩ জন পুরুষ এবং ৫১১ জন নারী মারা গেছেন। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন, সিলেট বিভাগে ৫ জন, খুলনা বিভাগে ৫ জন এবং বরিশাল বিভাগে ১ জন রয়েছেন। তাদের ২৯ জন হাসপাতালে এবং ৪ জন বাসায় মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮৬১ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৬৬০ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘণ্টায় ৫৭২ জন এবং এখন পর্যন্ত ২০ হাজার ৪৭১ জন ছাড় পেয়েছেন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৩৮ হাজার ১৩১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৫০ জনকে। এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৩০৫ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৬১৮ জন এবং এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬৬২ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬১ হাজার ৬৪৩ জন।