ফেনীর সোনাগাজীতে নুসরাত জাহান রাফী (১৮) নামের এক আলিম পরীক্ষার্থীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে সহপাঠীরা। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। তার আত্মচিৎকারে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও পরবর্তীতে ফেনীর আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
পরীক্ষার্থীর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, শনিবার সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠিত আলিম পরীক্ষার আরবি প্রথমপত্র বিষয়ে অংশ নিতে নুসরাত জাহান রাফি সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যায়। ওই সময় নিশাত নামে রাফীর এক বান্ধবীকে মাদরাসার ছাদে কে বা কারা মারধর করছে বলে ফুসলিয়ে তাকে ওইখানে নিয়ে যায়। পরে রাফীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায় কয়েকজন সহপাঠী। এ সময় তার চিৎকারে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও পরবর্তীতে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করেন।
সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নুরুল আলম জানান, ওই ছাত্রীর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আবু তাহের জানান, আগুনে পরীক্ষার্থীর শরীরের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সোনাগাজী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত: ১৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। অন্যদিকে আরেকটি পক্ষ অধ্যক্ষের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন।



