ফেনী
শনিবার, ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:৫১
, ১৪ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ভন্ড সিরাজের উত্থান

*টাকা দিয়ে গড়েন শক্তিশালী সিন্ডিকেট
*নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ
*নতুন মাদ্রাসার শেয়ারহোল্ডার দেওয়ার নামে বহু মানুষের সর্বস্ব আত্মসাৎ
*ছাত্রজীবনেও বলাৎকারের অভিযোগে কয়েকটি মাদ্রাসা থেকে বিতাড়িত

ফেনীর সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করে নুসরাত জাহান রাফীর শ্লীলতাহানি ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় রিমান্ডে থাকা অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ-দৌলা। মাদ্রাসায় পড়াশোনকালেই সোনাগাজীতে সে ছাত্রশিবিরের দুর্ধর্ষ ক্যাডার হিসেবে বেশ পরিচিতি পায়। এরপর মূল দল জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয় হয়। এক পর্যায়ে রুকন হিসেবে শপথ নিয়ে সে সোনাগাজী উপজেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্যের দায়িত্ব পায়। মাঝখানে চার থেকে পাঁচটি মাদ্রাসায় চাকরি নিলেও বলাৎকারসহ নানা অভিযোগে তাকে বিতাড়িত করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতসহ চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এলে এই জামায়াত নেতা সিরাজ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পায়। পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতা হারালেও রাফীর এ ঘটনার আগ পর্যন্ত বহাল তবিয়তে ছিল মাওলানা সিরাজ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সিরাজের এই প্রভাবশালী হয়ে ওঠার নেপথ্যে ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের কয়েকজন নেতা, পুলিশ ও কতিপয় সাংবাদিকসহ শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই প্রভাবশালীদের টাকার বিনিময়ে হাতের মুঠোয় রেখেছিল সিরাজ। নিয়মিত মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে তাদের পুষত সে। এ কারণে বিভিন্ন সময় নারী কেলেঙ্কারি ও আর্থিক দুর্নীতিসহ একাধিকবার জেল খাটলেও প্রায় সবক্ষেত্রেই তাকে পার করেছে এই সিন্ডিকেট। মাওলানা পরিচয়ে ইসলামের পবিত্র কথা বলে এতসব অপকর্ম করায় স্থানীয়রা এখন তার নাম দিয়েছে ‘ভন্ড সিরাজ’ বলে। মঙ্গলবার ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা সদর ও সিরাজের গ্রামের বাড়ি চরকৃষ্ণজয় এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সোনাগাজী উপজেলার ৮ নম্বর আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) স্থানীয় মেম্বার মো. গোলাম কিবরিয়া শামীম সময়ের আলোকে বলেন, সিরাজ ছাত্রজীবনে জামায়াতের অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের বড় ক্যাডার ছিল। পরবর্তী সময়ে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতেও সক্রিয় ভ‚মিকা পালন করে। উপজেলা জামায়াতের রুকনসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে সে। ক্ষমতার পালাবদলে সিরাজ স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায় চলে যায়। তবে সে এখনও মনেপ্রাণে জামায়াতের রাজনীতি করে। নিজের প্রভাব ও অপকর্ম নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতেই টাকা দিয়ে স্থানীয় রাজনীতিক ও প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে সিরাজ।

চরকৃষ্ণজয় গ্রামের কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ বাসিন্দা জানান, আমিরাবাদ মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করার পর ফেনী শহরের এক সময়ের জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত ‘আল জামায়াতুল ফালাইয়া কামিল মাদ্রাসায়’ ভর্তি হয় সিরাজ। সেখানে কিছু দিন পরই একজন জুনিয়র ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ ওঠে সিরাজের বিরুদ্ধে। সেটি প্রমাণ হওয়ার পর ওই মাদ্রাসা থেকে লাঞ্ছিত করে বের করে দেওয়া হয় ভন্ড সিরাজকে। এ ছাড়াও কর্মজীবনের শুরুতে ফেনী সদরের উত্তর ধলিয়া সালামতিয়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষক হলে সেখানেও তার বিরুদ্ধে চারিত্রিক বিষয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। সেখান থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর ফেনী সদরের কালিদহ ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার গোবিন্দপুর সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসায় চাকরি নেয়। সেখানেও বেশিদিন থাকতে পারেনি। এরপর নোয়াখালী জেলার একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার এক পর্যায়ে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে চাকরি নেয়।
যেভাবে প্রভাবশালী হয়ে ওঠা : সোনাগাজী সদরে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে জামায়াত নেতা হিসেবে সোনাগাজী ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি পায় সিরাজ। মূলত এখান থেকেই তার উত্থান শুরু। তিন তলাবিশিষ্ট বিশাল আয়তনের এই মাদ্রাসার বিপুল সম্পদের প্রতি সিরাজের নজর পড়ে। উপজেলা সদরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানের এই মাদ্রাসার শতাধিক দোকান (মাদ্রাসা মার্কেট) ও পুকুরসহ নানা সম্পদ থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় হয়। তখনই সিরাজ পরিকল্পনা করে কীভাবে এসব নিজের মতো করে ভোগ করা যায়। সে অনুযায়ীই পথচলা শুরু করে। এরই মধ্যে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতা হারালে এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সিরাজ তখন সুর পাল্টাতে থাকে। স্থানীয় সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক (বহিষ্কৃত) ও পৌর কাউন্সিল মাকসুদ আলমসহ স্থানীয় পুলিশ ও সাংবাদিকদের হাত করতে থাকে। যেসব লোক তার অপকর্ম ও দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদ করতে পারে তাদেরই টাকা দিয়ে নিজের বলয়ে নিয়ে এসে তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। এমনকি স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ একশ্রেণির উঠতি তরুণকেও নানা অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তার দলে ভেড়ায়। মাওলানা সিরাজ রীতিমতো একটি বাহিনী গড়ে তোলে। ফলে বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও এই প্রভাবশালীরা তার পক্ষ নিয়ে সবকিছু ধামাচাপা দিয়ে দেয়।

স্থানীয়রা বলছেন, মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফীর শ্লীলতাহানি এবং আগুনে পোড়ানোর ঘটনাটিও ধামাচাপা দিতে তৎপর ছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনসহ এসব নেতা, সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ও কয়েকজন স্থানীয় সাংবাদিকসহ বখাটে কিছু তরুণ। স্থানীয় এই রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশ কর্মকর্তারা ফেনীর জেলা পর্যায়ের বা সদরের ঊর্ধ্বতনদের ম্যানেজ করতেন। এভাবেই প্রায় সব ঘটনাই ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
ফেনী জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাফীর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার নাটক তৈরির জন্য কেবল সোনাগাজীর নয়, জেলা পর্যায়ের প্রভাবশালী সিন্ডিকেটও নেপথ্যে মদদ জুগিয়েছে। পুলিশ, মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাসহ প্রভাবশালীদের ভ‚মিকা ছিল রহস্যজনক। পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়ে পরিস্থিতি উল্টে যাওয়ায় এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘটনা মনিটরিং করায় স্থানীয় রাজনীতিকদের অনেকেই ভোল পাল্টে রাফীর মৃত্যুর জন্য প্রতিবাদ ও মানববন্ধন শুরু করে। অথচ রাফীর শরীরে আগুন লাগানোর আগেও ওই প্রভাবশালীরা অধ্যক্ষ সিরাজের জন্য কাজ করেছে। এমনকি রাফীর শ্লীলতাহানির অভিযোগের পর এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে উঠলে সিরাজকে জনরোষ থেকে বাঁচাতেই পুলিশ তাকে নিরাপদে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু বিষয়টি যখন আরও প্রকট আকার ধারণ করে এবং রাফীর মা থানায় মামলা করেন তখন পুলিশ বাধ্য হয়েই সিরাজকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়।

আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে যত অভিযোগ : রাফীর ওপর বর্বরতা চালানোর বাইরেও অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন, কোটি টাকা আত্মসাৎ ও চেক জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগে ছয়টি মামলা বিচারাধীন। ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে মাদ্রাসার তহবিল তছরুপের অভিযোগও আছে সিরাজের বিরুদ্ধে। এ ঘটনা তদন্ত করে ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভায় ভুয়া ভাউচার তৈরির পাশাপাশি কাগজপত্র সঠিক নয় বলে সতর্ক করেছিলেন তৎকালীন ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যজিস্ট্রেট ও মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি পিকেএম এনামুল করিম।

এ ছাড়াও সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ পদে থাকা অবস্থায় ফেনী শহরে উম্মুল কুরা নামে একটি মাদ্রাসা গড়ে তোলে সিরাজ। এই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডার বানানোর কথা বলে বহু মানুষের কাছ থেকে নেওয়া বিপুল অংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে সিরাজের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আবদুল কাইয়ুম নামে একজন ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ২০১৭ সালের ২৮ আগস্ট ১ কোটি ৩৯ লাখ ৪ হাজার ৬০০ টাকার চেক জালিয়াতির মামলা করেন। ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (আমলি) দুটি মামলা হয়। এসব মামলায় ২০১৮ সালে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন তিনি।

যৌন নির্যাতনের নানা অভিযোগ : রাফীর ঘটনার প্রায় বছরখানেক আগে মাদ্রাসার অন্য এক শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে। প্রথমে ভুক্তভোগীরা মুখ খুললেও কয়েকদিনের মধ্যেই এ বিষয় তারা চেপে যায়। স্থানীয়দের ধারণা, প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয় সিরাজ। এরপর গত ২৭ মার্চ মাদ্রাসার নিজ কক্ষে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর সাহসী রাফীর প্রতিবাদের কারণেই ফেঁসে যায় সিরাজ।
নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ : স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক বছর আগে ২০ লাখ টাকায় সাড়ে চার শতক জমি ক্রয় করে সিরাজ। এরই মধ্যে দোতলা পাকা দালান সম্পন্ন করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে। ছয়তলা পর্যন্ত নির্মাণ করার কথা। এই বাড়ি নির্মাণ সম্পন্ন করতে প্রায় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার খরচ করবে বলেও স্থানীয়দের সঙ্গে একাধিকবার গল্পে বলেছিল অধ্যক্ষ সিরাজ। এর বাইরে চরকৃষ্ণজয় গ্রামেও বেশ কয়েক বছর আগে একটি দালানবাড়ি নির্মাণ করেছে। সিরাজ কারাগারে থাকার মধ্যেই গত ২৮ মার্চ জনতা ব্যাংকের সোনাগাজী শাখা থেকে সিরাজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। বাসা-বাড়ির বাইরে সিরাজের ব্যক্তি নামে এবং তার স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার ও ঘনিষ্ঠ স্বজনদের নামে একাধিক ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে মোটা অংকের টাকা রয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

সিরাজের পারিবারিক পরিচিতি : স্থানীয়রা জানান, সোনাগাজী উপজেলার আহাম্মদপুরের চরকৃষ্ণজয় এলাকার মৃত করিমুল্লাহ সওদাগরের ছেলে মাওলানা সিরাজ। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সিরাজ চতুর্থ। সিরাজ নিজে বিপুল অর্থ-বৈভবের মালিক হলেও তার অন্য ভাইয়েরা আর্থিকভাবে অনেকটা অসচ্ছল। ছোট ভাই স্থানীয় বাজারের নৈশপ্রহরী। দুই ভাই ঢাকায় একটি কোম্পানির মালিকের বাসায় কাজ করে। সিরাজের এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে ঢাকায় লেখাপড়া করে আর মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, অধ্যক্ষ সিরাজের বাবা এক সময় মাথায় করে মুড়ির মোয়া বিক্রি করতেন। পরে স্থানীয় আমিরাবাদ বাজারে চায়ের দোকান দিয়েছিলেন। তবে বেশিকিছু দিন আগে তিনি মারা গেছেন।

গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা দিতে যায় রাফী। দুর্বৃত্তরা কৌশলে তাকে ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর আগে ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ওইদিনই গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে ৫ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাফী মারা যায়।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!