র্যাব পরিচয়ে অপহরনের প্রায় দুই মাসেও খোঁজ মেলেনি সোনাগাজী উপজেলার গাজী মিলন নামে যুবলীগ নেতার। অপহরনের পর সোনাগাজী মডেল থানায় সাধারন ডায়েরী,ফেনী র্যাব ক্যাম্পে অভিযোগ দিলেও প্রশাসনের তরফ থেকে কোন সহযোগীতা না পেয়ে হতাশ যুবলীগ নেতার পরিবার।র্যাব পরিচয়ে অপহরণের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফেনীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিখোঁজ যুবলীগ নেতা মিলন গাজীর স্ত্রী ও পুত্র। গত ১০ মে র্যাব পরিচয়ে সাদা পোষাকে সোনাগাজীর চরছান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামা বাজারেরর জাহাঙ্গির ডাক্তারের ফার্মেসী থেকে গাজী মিলনকে একটি কালো মাক্রোতে তুলে দক্ষিন দিকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। অপহৃত গাজী মিলন চরছান্দিয়া ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি।তার পিতার নাম আবদুস সামাদ। তিনিও চর-ছান্দিয়া ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি।এসময় লিখিত বক্তব্য পড়েন মিলনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমান। বক্তব্য রাখেন মিলনের স্ত্রী আকলিমা বেগম। উপস্থিত ছিলেন মিলনের ভাইয়ের স্ত্রী জেসমিন আক্তারসহ পরিবারের সদস্যরা।
গাজী মিলনের স্ত্রী আকলীমা বেগম সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রায় দুই মাস ধরে নিখোঁজ স্বামীকে ফিরে পেতে র্যাব, পুলিশ, ডিবি পুলিশ, পিবিআিই, স্থানীয় এমপি মাসুদ চৌধুরী, ফেনী সদরের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ সমাজপতিদের দারে দারে ঘুরছেন কিন্তু কেউ তার খোঁজ দেননি। গত ১০ মে গাজী মিলন কে তুলে নিলে ঘটনার ১০ দিন পর ২০ মে র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্প বরাবর লিখিত অভিযোগ ও সোনাগাজী থানায় সাধারন ডায়েরী করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মিলন গাজীর ভাবী জেসমিন আক্তার ও ছেলে আবদুল্লা নোমান উপস্থিত ছিলেন। গত দুই মাস ধরে খোঁজ করেও মিলনের সন্ধান না পেয়ে তারা সংবাদ সম্মেলন করেন বলে জানান।
এর আগে গত ১৯ জুন গাজী মিলনের স্ত্রী আকলিম বেগম প্রথমবার সোনাগাজীতো সংবাদ সম্মেলন করে স্বামীকে অপহরনের জন্য র্যাবকে দায়ী করেছেন।
মিলনকে যে দোকান থেকে অপহরন করা হয়েছে সেই দোকানের মালিক পল্লি চিকিৎসক জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ঘটনার দিন আমি মিলনের পা ড্রেসিং করতেছিলাম, এসময় ৪/৫ জন লোক নিজেদের র্যাব পরিচয় দিয়ে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে মিলনকে তুলে নিয়ে রাস্তায় অপেক্ষমান কালো গাড়ীযোগে দ্রুত দক্ষিন দিকে চলে যায়।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, মিলনকে অপহরন করা হয়েছে এমন খবর তার পরিবার পরিজন ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে পেয়ে বাজারে যায়। এসময় বাজারে উপস্থিত সবাই বলেন, মিলনকে র্যাব পরিচয়ে অপহরন করা হয়েছে। সাথে সাথে সোনাগাজী থানা, র্যাব ক্যাম্পে ফোন করলে কেউ অপহরনের বিষয়টি জানেনা বলে জানান।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মইন উদ্দিন বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর মিনকে উদ্ধারে পুলিশ চেষ্টা করছে। তবে মিলনের পরিবার অভিযোগ করেছে, তাকে উদ্ধারে প্রশাসনের কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছেনা, জিডি করার পর থেকে তারা আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি।
র্যাব ফেনী ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএসপি জুনায়েদ জাহিদি সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মিলন নামের কাউকে র্যাব আটক বা তুলে আনেনি। তার পরিবার বিষয়টি আমাদের জানানোর পর তাকে উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তিনি আরো বলেন, আমরা খবর নিয়ে জানতে পেরেছি ছোট ফেনী নদীতে ব্লক ও পাথর তোলা নিয়ে মিলনের সাথে নদীর ওপারের অনেকের বিরোধ রয়েছে, ব্যাক্তিগত বিরোধের জেরে তাকে তুলে নেওয়া হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।