ক্রীড়া ডেস্ক: আকরাম খান, হাবিবুল বাসার আর মাশরাফি, সাকিব আল হাসানরা যা করতে পারেননি, সেটাই করে দেখিয়েছেন সালমা-রুমানারা। মেয়েদের এশিয়া কাপ জিতে প্রথমবার বাংলাদেশকে বৈশ্বিক কোন টুর্নামেন্টর শিরোপার স্বাদ পাইয়ে দিয়েছেন লাল সবুজের বাঘিনী কন্যারা। তাই স্বাভাবিক ভাবেই নারী ক্রিকেট দলের কাছে প্রত্যাশাটা আরও বেড়েছে। কিন্তু ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে নাস্তানাবুদ মেয়েরা। একেবারে ৩-০ ব্যবধানে ‘হোয়াইটওয়াশ’। তবে ফরম্যাট বদলাতেই বদলে গেছে দল।
সোমবার কক্সবাজারে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিরিজের একমাত্র ওয়ানডে ম্যাচে পাকিস্তান নারী দলকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে নারী ক্রিকেট দল।
এদিন টস জিতে আগে ব্যাট করে খাদিজাতুল কুবরার বোলিং তাণ্ডবে মাত্র ৯৪ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের মেয়েরা। অথচ শুরুটাও দারুণ করেছিল সফরকারিরা। ১ উইকেট হারিয়েই ৫০ রান সংগ্রহ করলেও মাত্র ৯৪ রানেই অলআউট হয় পাকিস্তান।
পাকিস্তানকে এত অল্প রানে গুঁড়িয়ে দেয়ার নেপথ্য কারিগর খাদিজা তুল কুবরা। তার স্পিন বিষে নীল হয় সফরকারীরা। তিনি ২০ রান খরচায় একাই নেন ৬ উইকেট। ডানহাতি অফস্পিনারের এটি ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। বাংলাদেশ নারী ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসেও সেরা বোলিং ফিগার।
১৫তম ওভারে নিজের হয়ে প্রথম আঘাত হানেন খাদিজা। বাকি সময় তার স্পিন ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়ে পড়ে পাকিস্তান। কোনোভাবেই ওর স্পিন ভেলকি পড়তে পারেননি প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা। শেষ পর্যন্ত ৯৪ রান তুলতেই গুটিয়ে যায় তারা। শেষ ৫ উইকেট হারায় মাত্র ১০ রানে।
৯.৫ ওভারে এক মেইডেনসহ ২০ রান খরচায় ৬ উইকেট নেন খাদিজা। এটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট। প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে ৫ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া রুমানা আহমেদ ২, জাহানারা আলম ও লতা মন্ডল নেন ১টি করে উইকেট।
জবাবে ৯৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন আয়েশা রহমান। খানিক পর রানআউটে কাটা পড়ে বিদায় নেন আরেক ওপেনার শারমিন আক্তার। সালমারা টি-টোয়েন্টি সিরিজে কোনো ম্যাচে ৯০ রান করতে না পারায় তখন এ রানও অসম্ভব মনে হয়!
তবে তা সহজ করে দেন ফারজানা হক ও রুমানা আহমেদ। তৃতীয় উইকেটে ৮১ রানের জুটি গড়েন তারা। ব্যক্তিগত ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক রুমানা। কিছুক্ষণ পরে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন আরেক সেট ব্যাটসম্যান ফারজানা। তিনি থামেন হাফসেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে।
তবে জয় আটকায়নি বাংলাদেশের। কারণ তখন জয় ছিল হাতের মুটোয়। শেষ পর্যন্ত লতা মন্ডল এবং ফাহিমা খাতুনের ব্যাটে ২৯ ওভারে লক্ষ্য পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের উৎসবে মেতে উঠে রুমানা-সালমারা।