ফেনী
রবিবার, ৩রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৭:১৩
, ৮ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

মশা মারতে ড্রোন

 

 

কথা ডেস্কঃ  মশা মারতে কামান দাগানোর প্রবাদ আছে। এবার মশা মারতে ছাড়া হবে ড্রোন। মনুষ্যবিহীন এই আকাশযান থেকে কিন্তু মশাই ছাড়া হবে, যা মশার বংশবিস্তারে ঠিক বিপরীত কাজটাই করবে।

মশার জীবাণু নিধন ও বন্ধ্যত্বকরণে বড় সাফল্য পেয়েছে জাতিসংঘ। মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এই সাফল্য এসেছে। ব্রাজিলে জিকা ভাইরাস মোকাবিলার অংশ হিসেবে কয়েক লাখ এডিস মশা জীবাণুমুক্ত ও বন্ধ্যা করে ড্রোন দিয়ে ছাড়া হচ্ছে।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বলছে, যেসব মশা মানুষকে কামড়ালে জিকা ও ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়িয়ে প্রাণঘাতী জ্বরে ভোগায়। সেসব পুরুষ মশা পরীক্ষাগারে লালন করে জীবাণুমুক্ত ও বন্ধ্যা করা হয়েছে। এতে পুরুষ মশা নারী মশার সঙ্গে মেলামেশা করলেও কার্যকর ডিম উৎপাদন হচ্ছে না।

আইএইএর বিশেষজ্ঞ জেরেমি বোয়্যার বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে আপনি মশার বংশবিস্তার কমাতে এবং মশার পরবর্তী প্রজন্ম ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত দমন করতে পারেন। আগে মশা বাতাসে ছেড়ে দেওয়ার কথা আমাদের চিন্তায় ছিল না। কিন্তু এখন ড্রোন ব্যবহার করে মশা ছাড়া হচ্ছে। প্রচুর খরচ কমিয়ে এবং বৃহৎ মাত্রায় মশা বাঁচিয়ে এটা একটি বড় সাফল্য।’

সম্প্রতি রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রাজিলে ২০১৫-১৬ সালে জিকা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসের কারণে হাজারো শিশুর ত্রুটি নিয়ে জন্মাচ্ছে। সময় ও শ্রম ব্যয় করে এখন বংশবিস্তারে নিষ্ক্রিয় মশা ছাড়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এসব মশা ছাড়ার পদ্ধতি সময় সাপেক্ষ এবং শ্রমিকনির্ভর। যেসব এলাকায় রাস্তাঘাট খারাপ এবং বন্যা রয়েছে, সেসব এলাকায় ট্রাক পাঠিয়ে এ কাজ সারা হয়।

আইএইএ, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান উইরোবোটিকস গত মাসে ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার ও বিশেষভাবে অভিযোজিত ড্রোন ব্যবহার করে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার মশা ছেড়েছে।

উইরোবোটিকসের সহপ্রতিষ্ঠাতা অ্যাডাম ক্লপটোকজ বলেন, ‘আমি যত দূর জানি প্রথমবারের মতো একটি ড্রোন থেকে প্রচুরসংখ্যক মশা সফলভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য এবং কার্যকর উপায়ে আমরা বৃহৎসংখ্যক মশা পরিবেশে ছাড়ছি।’

কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে ড্রোন দিয়ে মশা ছাড়ার প্রকল্পে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মন্টিনিগ্রো এবং গ্রিস আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানান জেরেমি বোয়্যার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতিবছর কয়েক লাখ মানুষ মশা থেকে ছড়ানো রোগে মারা যায়।

মশার জীবাণু নিধন ও বন্ধ্যত্বকরণে এই সাফল্যে মশা বেঁচে থেকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!