সোনাগাজী প্রতিনিধিঃ সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ আরএম হাট কে উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচজন খন্ডকালী শিক্ষককে চাকুরীচ্যুত করেছে পরিচালনা পর্ষদ। প্রতিবাদে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির অপসারণ দাবীতে মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানায়, মতিগঞ্জ আরএম হাট কে উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ সাত-আট বছর যাবত ১৭জন খন্ডকালীন শিক্ষক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে পাঠদান করে আসছেন। গতবছর বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজন শিক্ষক শূণ্য পদে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু গত মার্চ মাসের ২৮ তারিখে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে বিদ্যালয় অনেক ঋণ গ্রস্থ এবং খন্ডকালীন শিক্ষক বেশি হওয়ায় তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা পরিচালনা পর্ষদের পক্ষে সম্ভম্ব্য হচ্ছে না। হঠাৎ এমন কথা উত্থাপন করে খন্ডকালীন কয়েজন শিক্ষককের চুক্তি বাতিল করার জন্য প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ও সভাপতি সারওয়ার আলম সম্মতি প্রকাশ করেন। পরে সভাপতির পক্ষে প্রধান শিক্ষক খন্ডকালী পাঁচজন শিক্ষককে চুক্তি বাতিল করে ৩১ মার্চ তারিখে চিঠি দেন। বিষয়টি শিক্ষার্থীরা জানত না। চলতি মাসের ১ ও ২ তারিখে চুক্তি বাতিল করা শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত দেখে গত সোমবার শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কার্যক্রম শেষে তারা জানতে পারে পাঁচজন শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এসে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগ মুর্হুতে মাঠে জড়ো হয়ে কেন পাঁচজন শিক্ষককের চুক্তি বাতিল করা হল সে বিষয়ে তারা প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাই। প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে সঠিক জবাব না পেয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে চুক্তি বাতিল করা শিক্ষকদের পূর্ণবহাল ও প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির অপসারণ দাবী করে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকে। খবর পেয়ে সোনাগাজী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কয়েকজন বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী জানায়, যে সকল শিক্ষকদের কে বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁরা অনেক ভাল। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মিলে অনিয়ম- দূর্নীতি করার জন্য পাঁচজন শিক্ষককের চুক্তি বাতিল করেছে। শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ণবহাল চায়। অণ্যথায় তাঁরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির অপসারণ দাবি করেন।
চুক্তি বাতিল হওয়া শিক্ষক সুব্রত নাথ জানান, তিনি প্রায় সাত বছর উক্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছেন। গত শনিবার বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর প্রধান শিক্ষক তাদেরকে অফিস কক্ষে ডেকে বিদ্যালয়ের আর্থিক অবস্থা খারাপ বলেই্ তাদের পাঁচজনের চুক্তি বাতি করা হয়েছে বলে পাঁচটি চিঠি দিয়ে পরদিন থেকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করে দেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ে পদের চেয়ে অতিরিক্ত শিক্ষক হওয়ায় এবং বিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে পাঁচজন শিক্ষককের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। এখানে কোন প্রকার অনিয়ম -দূর্ণীতি হয়নি।