ফেনী
শনিবার, ২রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:৩৩
, ৭ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

‘জঙ্গিবাদ ও খ্রিষ্টান সন্ত্রাসবাদে আরেকটি নতুন অধ্যায়’

নিউজিল্যান্ড ‘ক্রোইস্টচার্চে মসজিদে’ জুমার নামাজের সময় আতাতায়ীদের হামলায় প্রায় ৪৯ জন নিহত! (নিহতের সংখ্যা চলমান)
ওই মসজিদে নামাজ পড়ছিলো বাংলাদেশের খেলোয়াড়রাও,অল্পের জন্যই বেঁচে গেলেন তারা!.
.
আসুন ইতিহাসের পাতায়.!!
.
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে যেসব নিকৃষ্ট ও অমানবিক জঙ্গি হামলাগুলো হয়েছে তার মধ্যে এটাও অন্যতম। ইতিহাসে আরেকটি নতুন অধ্যায় শুরু করলো খ্রিস্টান সন্ত্রাসবাদ। আমরা যদি সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের ইতিহাস দেখি তাহলে তার বড় একটি অংশজুড়ে দেখতে পাব খ্রিষ্টান এবং ইহুদীদের। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কারা ঘটিয়েছিলো? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কারা ঘটিয়েছিলো? ৬০ লক্ষ ইহুদীদের কে মেরেছে? নিঃসন্দেহে এই প্রশ্নগুলো উত্তর খুঁজতে কোনো পাগলও মুসলিমদের কাছে বা তাদের দাঁড়ি, পাঞ্জাবি, টুপি, বোরকার কাছে যাবে না.! একটা পাগলও জানে হিরোসীমা, নাগাসাকিতে কে বোমা ফেলেছিলো! ওসামা বিন লাদেন’ তখন থাকলে ভালো হতো। খ্রিস্টান সন্ত্রাসরা তার উপর ও তালেবানদের উপর ভালোভাবেই চাপাতে পারতো.!
.
আমরা যদি ইহুদীদের উৎপত্তির দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব, তারা জার্মানি থেকে উৎখাত হওয়ার পর বিভিন্ন সময় সারা বিশ্বে ছোটোখাটো অনেক সন্ত্রাসবাদী ঘটনা ঘটিয়েছে। যে আমেরিকা, ব্রিটেন তাদেরকে ইসরাইলে জায়গা করে দিল তারা তাদের বিরুদ্ধেও জঙ্গি হামলা করেছিলো। ‘হ্যাগানা, স্ট্যান গ্যাং, ইরগুন’ ইহুদী দল গুলোর ২৫৯ টি জঙ্গি হামলার কথা কে না জানে! ১৯৪৬ সালের ২২ই জুলাই কিং ডেবিড হোটেলে আক্রমনের ব্যাপারটা আমরা সবাই জানি.! ‘ইরগুন’ এর সদস্যরা পাঞ্জাবি পড়ে প্রায় ৯৫ জন জন ব্রিটিশ ও আরবদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিলো। যাতে মানুষ বুঝতে পারে যে এটা আরবরা চালিয়েছিলো কিন্তু সত্য চাপা থাকে না। তারপর ইসরাইলে তাদের উত্থান ও ফিলিস্তিনিদের উপর নির্যাতনের কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। ‘আইজ্যাক রবিন, এরিয়েল শ্যরন, ম্যানাকেন ব্যাগান’ এর মতো ইসরালি শাসকদের ফিলিস্তিনে জঙ্গি হামলার কথা কে না জানে! এখনও তারা ক্রমাগতভাবে ফিলিস্তিনিদের উপর নির্যাতন করেই চলছে.! যে ‘ম্যানাকেন ব্যগান’ এত জঙ্গি হামলা করলো তাকেই আমেরিকা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বানায় এবং তাকেই ‘শান্তিতে নোবেল প্রাইজ দেয়। লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি মুসলিমদেরকে আজ মেরে পেলতেছে কিন্তু ‘United Nation’ নামক বিশ্ব নাটকীয় বিবেক আজ চুপ.! কথায় আছেনা ‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই’!
.
খ্রিষ্টানদের কথা বলতে গেলে ব্রিটেন এবং আমেরিকাকে বাদ দেওয়া বড় ভুল হবে। ব্রিটেনরা সারা বিশ্বে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করে মানুষদের উপর যে নির্যাতন করেছিলো আজ তা কারো কাছে অজানা নয়। আমেরিকা হলো বিশ্ব জঙ্গিবাদের অন্যতম আখড়া! ১৭৭৬ সালে স্বাধীনতার পর থেকে তাদের উত্থানে ছিলো অনেকাংশে মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাব। সিরিয়া, ইরাকে কত মুসলিমদেরকে তারা প্রতিদিন হত্যা করতেছে আজ তা কারো দৃষ্টি এড়ায় না। ‘ওয়ান ইলাভেনের’ সময় ‘ওসামা বিন লাদেনে’র হামলাকে কেন্দ্র করে তারা মুসলিমদের ব্যপারে যে অপপ্রাচার চালিয়েছিলো তা আজ একজন শিশুও জানে। তার পরবর্তী সময়েই আলজাজিরা সহ অনেক TV চ্যানেল প্রকাশ করে যে এই ঘটনার পেছনে খোদ আমেরিকার শাসকরাই নিযুক্ত। ২০০৬ সালে মিথ্যা অস্র মামলা দিয়ে ‘সাদ্দাম হোসেন’ কে যেভাবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিলো তার জবাব ইরাকি একজন সাংবাদিক ‘বুস’কে জুতা মারার মধ্য দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছিলো। এখনও খ্রিস্টান সন্ত্রাসরা সাজানো নাটকের মাধ্যমে আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাকে হাজার হাজার মুসলিমদেরকে প্রতিদিন হত্যা করতেছে। কিন্তু বিশ্ব বিবেক এখনো চুপ.!
.
এইবার আসি বোদ্ধ সন্ত্রাসবাদ এর দিকে। চীনের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাব ‘উইঘুর’ মুসলিম উপজাতিদেরকে তারা যেভাবে নির্যাতন করতেছে এবং হত্যা করতেছে তার চিত্র যে কারো শরীরে লোম দাড় করিয়ে দিতে সক্ষম। মিয়ানমারের বোদ্ধদের কথা আর কি বা বলবো! তারা যেভাবে রোহিঙ্গাদের হত্যা করেছে, করতেছে তা কারো কাছে অজানা নয়!
.
এইবার আসি হিন্দু সন্ত্রাসবাদের দিকে। ভারতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সূত্র ও এর কাহিনী আমরা সবাই জানি। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কাহিনীও আমরা জানি। জুম্মু কাশ্মীরে শত শত মুসলিমদের হত্যার কথা সবাই জানে। যা আজও চলতেছে। এক্ষেত্রে ১৯৪৭ সালে ‘স্যার র‍্যাডক্লিপ’ এর কথা না বললেই নয়! তিনি বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যকার সীমানা নির্ধারণ করতে গিয়ে একটা চাল চেলেছেন। আর তা হলো ‘লাইন অব কন্ট্রোল’ নির্ধারণ করতে গিয়ে তিনি কাশ্মীর’কে স্বাধীন অথবা ইউনিক কাউকে দেননি যাতে সেখানকার শান্তিকামী মুসলিমরা শান্তিতে বাস করতে পারতো। আর আজ ‘আজাদ কাস্মীর’ পাকিস্থানের পক্ষ হওয়ায় এতে কিছুটা শান্তি থাকলেও ‘জুম্মু কাশ্মীর’ এ কোনো শান্তিই নেই। কারণ তা ভারতের পক্ষে। মুসলিমদের অধিকার নিয়ে তাদের শরীরের চুলকানির কথা আর কি বলবো!
ভারতীয় মুভি গুলো দেখলে বুঝা যায় তারা কতটা মুসলিম বিদ্বেষী.! প্রত্যেকটা জঙ্গিবাদের চিত্রতে তারা ইসলাম ও মুসলিমদের মেনশান করে। ইসলামকে তারা জঙ্গিবাদের ধর্ম হিসেবে প্রচার করে। টুপ, পাঞ্জাবি, দাঁড়ি, বোরকা তাদের কাছে মুসলিমদের অবহেলা হাসির পাত্রে পরিণত করার প্রধান খোরাক।
.
মিডিয়া সন্ত্রাস হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদ। ইসলাম বিদ্বেষী দালাল মিডিয়া গুলো জঙ্গিবাদের কথা আসলেই দাঁড়ি, টুপি, পাঞ্জাবি, বোরকাকে টেনে নিয়ে আসে। আর পা ছাটা দালালদের ব্যাপারে কিবা বলবো! সুশীল নামে ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবে প্রকাশ করাই তাদের কাজ। তারা খ্রিষ্টান সন্ত্রাসবাদের অনুসারী.! ইতিহাসের শেষ নেই, সন্ত্রাসবাদেরও শেষ নেই.!
.
আসুন আজকের ঘটনায়.!
.
‘ব্রেন্টন ট্যারেন্ট’ নামের এই অভদ্রলোক যে ২৮ বছর বয়সের শেতাঙ্গ অস্ট্রেলিয়ান, আজ নিউজিল্যান্ড এর ২ টা মসজিদে ৪৯ জন এর ও বেশি মুসলিমকে মেরে পেললো সে কোন ধর্মের??? সে কি দাঁড়ি, পাঞ্জাবি, টুপু পরে?? আমাদের সমাজের তথাকথিত সুশিল নামক নাস্তিকরা কোথায় যারা মুসলিমদের ছোটোখাটো বিষয় নিয়েও তিলকে তাল বানায়.! জবাব চাই.! এখন কিছু মানুষে ব্যাপারটাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে ধামাচাপা দিতে চাইবে! ‘জাতিসংঘ’ নামাক নাট্যমঞ্চ এ বিষয়ে খুব নীরব থাকতে পছন্দ
!

লেখকঃ

শিক্ষার্থী

আন্তার্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!