ছাগলনাইয়া প্রতিনিধি: ছাগলনাইয়ায় জমি দখলে নিয়ে রাস্তা নির্মাণ উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বল্লভপুর ৪নং ওয়ার্ডের ব্যক্তিমালিকানার ফসলি জমি দখল করে রাতারাতি রাস্তা করার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে। ফসলি জমির মালিকরা পেশাগত কারণে এলাকার বাইরে অবস্থান করার সুযোগ নিয়ে রাতারাতি এই রাস্তা করে ফেলেন জনপ্রতিনিধিরা। খবর পেয়ে জমির মালিকরা বাড়িতে এসে দেখেন তাদের জমি ভরাট করে ৮ ফুট প্রস্থের আধা কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হয়ে গেছে। অথচ দখল করে তৈরি করা রাস্তার ১০০ গজ পশ্চিমে আরেকটি প্রশস্ত রাস্তা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে অবসরপ্রাপ্ত এলাকার সরকারি কর্মকর্তা সেলিম চৌধুরী ও তার প্রবাসী ছেলেরা মোটা টাকা দেওয়ায় তাদের জন্য এই রাস্তাটি করে দেওয়া হয়েছে। তবে চেয়ারম্যান ও মেম্বার এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
সরেজমিন গেলে দক্ষিণ বল্লভপুর গ্রামের দক্ষিণ বল্লভপুর মৌজার চৌধুরী বাড়ির শামছুল হুদা চৌধুরী, অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন চৌধুরী, ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন, মো. দুলালসহ অন্যরা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ সেলিম ও সংশিস্নষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার আবু বক্কর ছিদ্দিক বাচ্চু রাতের আঁধারে তাদের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ফসলি জমিতে রাস্তা করে ফেলেন। এ ছাড়া তারা মসজিদের জমিও দখল করে রাস্তা নির্মাণ করেছেন। এ ব্যাপারে তারা চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে গিয়ে বিষয়টির কারণ জানতে চাইলে তারা বাড়াবাড়ি করলে পরিণতি ভালো হবে না বলে হুমকি দেন।
শামছুল হুদার ছেলে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ মুহিত সাফি অভিযোগ করেন, তার বাবার সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে গেলে চেয়ারম্যানের ভাড়াটে লোকজন তাকে ধারালো অস্ত্র ও পিস্তল নিয়ে হামলা করতে আসে। তবে চেয়ারম্যান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় জমির মালিকরা থানায় অভিযোগ করেছেন।
এদিকে বিষয়ে সংশ্নিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার আবু বক্কর ছিদ্দিক বাচ্চু বলেন, চেয়ারম্যান ৪০ দিনের কর্ম সৃজন কর্মসূচির বরাদ্ধ দিয়ে এই স্থানে রাস্তা নির্মাণ করতে বললে তিনি সেই মোতাবেক কাজ করছেন।
এদিকে এ বাড়ির জন্য রাস্তাটি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেলিম চৌধুরী অসুস্থ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার ছেলে ফজলুল করিম রাশেদ দাবি করেন, রাস্তা নির্মাণের জন্য তারা কোথাও কোনো টাকা খরচ করেননি। এলাকার স্বার্থে চেয়ারম্যান এই রাস্তা করে দিচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে সংশ্নিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল্লাহ্ সেলিম জানান, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ রাস্তাটি করা হয়েছে। এই জন্য কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের আর্থিক বা কোনো সুবিধা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। দিনদুপুরে জমির মালিক ও মসজিদ কমিটির অনুমতি নিয়ে এ রাস্তাটি করা হয়েছে। মসজিদের জায়গায় রাস্তা করায় মসজিদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চেয়ারম্যান মসজিদকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন।