ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। রোববার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে বক্তব্য তুলে ধরেন ফেনীর বিজ্ঞ আইনজীবী আক্রামুজ্জামান।
তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, রাফী হত্যাকান্ড দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত একটি ঘটনা। এ হত্যাকান্ডকে মর্মান্তিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৭ মার্চ রাফীকে নিজ কক্ষে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা কারাগারে থাকাকালীন মামলা তুলে নিতে রাফীর পরিবারকে হুমকি দেয় তার (সিরাজ) অনুসারীরা। পরে আসামীরা কারাগারে সাক্ষাৎ করতে গেলে মামলা তুলে নিতে রাফীর পরিবার রাজী না হলে প্রয়োজনে হত্যা করার নির্দেশ দেয় সিরাজ উদ-দৌলা। পরিকল্পনা মোতাবেক ১০ মিনিটের মধ্যে জঙ্গি স্টাইলে ঘটনার দিন রাফীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় বলে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা ও যুক্তি এবং বিভিন্ন আইনের রেফারেন্স আদালতে তুলে ধরেন এডভোকেট আক্রামুজ্জামান। এ সময় ফেনী জজ আদালতের পিপি এডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ, বাদি পক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু, সালেহ উদ্দিন শিমুল, নাজমুস সাকিব তানিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ১১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয়।
গত ২৮ মে ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো: জাকির হোসাইনের আদালতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ-দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০) কে আসামী করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা। ৩০ মে বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইন অভিযোগপত্রসহ মামলার নথি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পাঠিয়ে দেন। গত ১০ জুন মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে গ্রহণ হয়। ২০ জুন একই আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে। ২৭ জুন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।