ফেনী
বুধবার, ২২শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৬:২৯
, ২৯শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

নুসরাতকে হত্যা করে আত্নহত্যা প্রচার করতে নির্দেশ দেন সিরাজ 

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে প্রধান আসামী অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা।

রোববার দুপুরে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে তাকে হাজির করা হয়।রাত ৮ টা ৫০ মিনিটে তার জবানবন্দি রেকর্ড শেষ হয়।

পরে সাংবাদিকদের ব্রেফিংকালে পিবিআই চট্রগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো: ইকবাল জানিয়েছেন, সিরাজ উদ-দৌলা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এছাড়া নুসরাতকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে পরিবারকে হুমকি দিয়ে কাজ না হলে পুড়িয়ে হত্যা করে তা আত্নহত্যা বলে চালিয়ে দিতে কারাগারে দেখা করতে যাওয়া নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমকে নির্দেশ দেন সিরাজ।

এর আগে ২৭ মার্চ নিজ কক্ষে ডেকে রাফীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সিরাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ।৬ এপ্রিল রাফীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ৯ এপ্রিল রাফীর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের দায়ের করা মামলায় ১ নম্বর আসামী করা হয় সিরাজ উদদৌলাকে। ১০ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিনের আদালতে তাকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত
৭ দিনের রিমান্ড দেন।

এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম ১৬৪ ধারায় ১৫ এপ্রিল ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাকির হোসেনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা ধরে এই জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
জবানবন্দিতে নুর উদ্দিন জানান, গত ৩ ও ৪ এপ্রিল অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার সঙ্গে ফেনী কারাগারে দেখা করেন। সেখানে শামীম,জাবেদ হোসেন, হাফেজ আবদুল কাদেরসহ আরও কয়েকজন ছিলো। তারা ‘আলেম সমাজকে হেয় করায় রাফীকে
একটি কঠিন সাজা দেওয়ার জন্য সিরাজ উদদৌলার কাছে হুকুম চায়।
এই সময় শামীম নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার প্রস্তাব দিলে এ প্রস্তাবে সায় দিয়ে সিরাজ উদ্দৌলা তার নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ‘তোমরা কিছু একটা করো।’ একইসঙ্গে সিরাজ উদ্দৌলা এ নিয়ে ‘বেশ কিছু গোপন টিপস’ দেয় বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন নুর উদ্দিন।
নুর উদ্দিন আরও জানায়, সিরাজ উদ্দৌলার নির্দেশনা পাওয়ার পর গত ৫ এপ্রিল, শামীম, জাবেদ হোসেন ও হাফেজ আবদুল কাদেরসহ আরও কয়েকজন মাদ্রাসার পাশের পশ্চিম হোস্টেলে বৈঠকে বসে। সেই বৈঠকে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে মারার ব্যাপারে চূড়ান্ত পরিকল্পনা নেওয়া হয়, যা ৬ এপ্রিল বাস্তবায়ন করা হয়।

এ মামলায় এজাহারভূক্ত ৮ আসামীসহ মোট ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের মধ্যে নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি,কামরুন্নাহার মনি, জাবেদ হোসেন ও জোবায়ের আহম্মদ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। তাঁরা ৮ জনই রাফি হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে চঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছে।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!