ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফীকে পুড়িয়ে হত্যার পর থেকে তার গ্রামের বাড়ীতে দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই আছে। এসব দর্শনার্থীরা রাফীর পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের সান্তনা প্রদান করে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।তবে দর্শনার্থীদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছেন রাফির পরিবার মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় সোনাগাজী পৌরসভাস্থ চরচান্দিয়ায় রাফীর বাড়ীতে চট্টগ্রাম থেকে আগত দর্শনার্থী মাইনুল হোসেন এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, নৃশংস এই হত্যাকান্ডের বিষয়টি গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরে রাফীর পরিবারের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর খুব ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু পারিবারিক কাজে ব্যস্ত থাকায় দেরিতে হলেও গতকাল পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করতে পেরে নিজকে খুব সৌভাগ্যবান ব্যক্তি মনে হচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেন।
মঙ্গলকান্দি ইউনিয়ন থেকে আগত লিপি আক্তার রাফীর মায়ের সাথে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি এই হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়েছেন।
রাফীর বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানিয়েছেন, রাফীর মৃত্যুর পর থেকে প্রতিদিন শতাধিক নারী পুরুষ আমাদের দেখতে এসে সমবেদনা জানান। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
গত ২৭ মার্চ মাদরাসার আলিম পরিক্ষার্থী রাফীকে নিজ কক্ষে ঢেকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে রাফীর পরিবার মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সিরাজ উদদৌলা কারাগারে থাকা অবস্থায় ৬ এপ্রিল রাফীকে মাদরাসার ছাদে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে মুখোশধারীরা। এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করে নুসরাতের ভাই নোমান থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার এজাহারভ‚ক্ত আসামীসহ ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। ১৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের মধ্যে নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন্নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহাম্মদ ও অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। তাঁরা ৯ জনই রাফী হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে চঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছে।