শাহজালাল রতন: ফেনীর নবনির্মিত জেলা কারাগার ভবনে নিরাপত্তাজনিত নানা ত্রুটি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া কারাগারের বিভিন্ন ভবন নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারেরও অভিযোগ তোলা হয়। ফেনী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কারা কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে এসব ত্রুটি দূরীকরণে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
ব্রিটিশ আমলে ফেনী শহরের রাজাঝির দীঘির পাড়ে তিন তলাবিশিষ্ট ফেনী কারাগার নির্মিত হয়। তখন সেখানে মাত্র ১৭২ জন কারাবন্দির থাকার ব্যবস্থা করা হয়; কিন্তু জনসংখ্যা ও মামলা-কোমদ্দমা বৃদ্ধির কারণে এখন কারাবন্দির সংখ্যা বেড়েছে কমপক্ষে ৫ গুণ।
এ অবস্থায় ১৯৯৬ সালে ফেনীতে একটি নতুন কারাগার স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে তৎকালীন সরকার। পরে ফেনী শহরতলির রানীরহাট এলাকায় সাড়ে ৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয় কারাগারের জন্য। গ্রহণ করা হয় প্রকল্প। ২০১১ সালে শুরু হয় প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পে ৩৮০ জন বন্দি রাখার জন্য পাঁচটি ভবনে কয়েকটি ওয়ার্ড, দু’জন ফাঁসির আসামি রাখার পৃথক কনডেম সেল, দুটি নারী ওয়ার্ড, ১০ বেডের একটি হাসপাতাল কক্ষ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কারাগারটির নির্মাণ কাজ ২০১৪ সালে শেষ করার কথা ছিল; কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে চলতি বছর। বর্তমানে ফেনী কারাগারটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কারাভবন নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করেছে।
এ অবস্থায় ফেনীর নবনির্মিত কারাগারের কাজ শেষ হলেও নির্মাণ কাজের নানা ত্রুটির কারণে কারাগারের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে কারা কর্তৃপক্ষ। সংশ্নিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, কারাগারের আরপি গেটের সেন্ট্রিপোস্ট নির্মাণ করা হয়নি। কারাগারের বন্দি বিদ্রোহ, বন্দি পলায়ন ও যে কোনো ইমার্জেন্সির সময় ব্যবহারের জন্য পিতলের ঘণ্টা (পাগলা ঘণ্টা) স্থাপন করা হয়নি। কারাগারের পেরিমিটার প্রাচীরের বাইরে চার পাশে ওয়াচ টাওয়ার ও প্রহরীদের দ্রুত চলাচলের ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়নি। কারাভ্যন্তরে বন্দিদের নজরদারি করার জন্য সেন্ট্রিদের ছাদে ওঠানামার সিঁড়ি স্থাপিত হয়নি।
জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের জানান, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান সরেজমিন তা তদন্ত করেছেন। তিনি কারাগারে কমপক্ষে ৪৪টি ত্রুটি চিহ্নিত করেছেন। এসব ত্রুটি দূর করার জন্য সংশ্নিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বদরুজ্জমান বলেন, প্রকল্পে যা ছিল তা তারা করেছেন। এখন আরও কাজের আদেশ দেওয়া হলে তা করা হবে।