ফেনী
মঙ্গলবার, ২১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৮:৪০
, ২৮শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

পরিচয় গোপন রাখতেই নুসরাত হত্যায় বোরকা ব্যবহার 

ফেনীর আলোচিত নুসরাত জাহান রাফী  হত্যা মামলায় এবার কলেজ অধ্যক্ষসহ ৬জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।বুধবার  ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন সোনাগাজী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মদ মহি উদ্দিন চৌধুরী,উপাধ্যক্ষ রেজা মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী,স্থানীয় বাসিন্দা হাফেজ মোবারক হোসেন,মোঃ ইব্রাহীম,মোঃ নুর উদ্দিন ও আকরাম হোসেন।এসময় তাদের জেরা করেন আসামী পক্ষের আইনজীবিরা।আদালত পরবর্তী স্বাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আজ বৃহস্পতিবার
দিন ধার্য করেন।
এর আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রাফী হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামীকে  আদালতে হাজির করা হয়।

ফেনী জজ আদালতের পিপি এডভোকেট হাফেজ আহম্মদ জানান,বুধবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে ৬ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।এ মামলায় ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ইতিমধ্যে ৪৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।
স্বাক্ষ্যপ্রদানকালে কলেজ অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন চৌধুরী আদালতকে জানান,২০ এপ্রিল বেলা ১১ টা ৩৫ মিনিটে সোনাগাজী সরকারি কলেজ সংলগ্ন ডাংগি খালে জৈনক ইব্রাহিম একটি বোরকা পড়ে থাকতে দেখে।এটি আসামী যোবায়েরের দেখানো মতে পিবিআই উদ্বার করে।ওই সময় যোবায়ের উপস্থিত থেকে জানায় যে, ঘটনার দিন আত্নরক্ষার জন্য বোরকাটি ব্যবহার করে পরে খালে পেলে দেয়।পিবিআইয়ের জব্দ তালিকায় কলেজ অধ্যক্ষ স্বাক্ষর করেন বলে আদালতকে জানান।অন্যান্যরাও জব্দ তালিকায় স্বাক্ষর দেন বলে আদালতকে জানান।

গত ২৮ মে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ-দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)কে আসামী করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা।৩০ মে বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইন অভিযোগপত্রসহ মামলার নথি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পাঠিয়ে দেন। গত ১০ জুন মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে গ্রহণ হয়।২০ জুন একই আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে। ২৭ জুন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
গত ২৭ মার্চ মাদরাসার আলিম পরিক্ষার্থী রাফীকে নিজ কক্ষে ঢেকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে রাফীর পরিবার মামলা দায়ের করেন।এরপর মামলা তুলে নিতে রাফীর পরিবারকে হুমকি দেয় সিরাজের ক্যাডার বাহিনী।ওই মামলায় সিরাজ উদদৌলা কারাগারে থাকা অবস্থায় ৬ এপ্রিল রাফীকে মাদরাসার ছাদে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে মুখোশধারীরা।এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করে নুসরাতের ভাই নোমান থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামীসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।২১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের মধ্যে ১২ জনই রাফী হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে চঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছে।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!