সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায় ১০ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। গত ২৭ আগষ্ট ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলমের জবানবন্দির মাধ্যমে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহন শেষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আদালতে পিবিআই কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলমকে জেরা করেন আসামী পক্ষের আইনজীবি।রোববার ফের তাকে জেরা করা হবে।এদিকে পিবিআই কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলমের জেরা শেষ হলে যুক্তিতর্ক শুরু হবে।
এদিকে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেছেন সাক্ষ্যপ্রমাণ হাজির করে রাফী হত্যায় জড়িতদের অপরাধ প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে।তবে আসামীপক্ষের দাবি, বাদীপক্ষ প্রত্যক্ষ সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছে।
গত ২০ জুন মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ।২৭ জুন বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।এভাবে বিরতিহীনভাবে প্রতিটি কার্যদিবসে সাক্ষ্যগ্রহণ,জেরা ও বিভিন্ন আবেদনের নিস্পত্তি করেন আদালত।৩৭ কার্যদিবসে মামলায় জব্দ তালিকা, সুরতহাল রিপোর্ট, চিকিৎসক, আসামীদের ১৬৪ ধারার জবানবন্দি গ্রহণকারী ২জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ২ জন তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৮৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
এ মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মাত্র ৩৩ কার্যদিবসে তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এতে মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজ উদ- দৌলাসহ ১৬ জনকে আসামী করা হয়।আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম ৮০৮ পৃষ্ঠার ডকেট আদালতে উপস্থাপন করেছে। চার্জশিটে ৯২ জনকে সাক্ষী করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি হাফেজ আহম্মদ জানান, মামলায় বাদীসহ ৮৭জন সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেছেন তিনি।
সেপ্টেম্বর মাসে মামলায় রায় হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু।তিনি বলেন,মামলার ১৬ আসামীর প্রত্যেকেই যে রাফী হত্যায় জড়িত- তা সন্দেহাতীতভাবে আদালতে প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবি সিরাজুল ইসলাম মিন্টু বলেছেন, রাফী হত্যা মামলায় প্রত্যক্ষ সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছে পিবিআই। ঘটনাস্থলের আশপাশের প্রত্যক্ষদর্শীদের আদালতে হাজির করা হয়নি।
মামলার বাদী রাফীর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান মামলার ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আশা করি হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হবে। মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী, তাদের আইনজীবী ও সাক্ষীরা আন্তরিকভাবে কাজ করছেন।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা একই মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতকে যৌন নির্যাতন করে। এ নিয়ে মামলায় সিরাজকে গ্রেফতার করা হলে ৬ এপ্রিল রাফীকে পুড়িয়ে হত্যা করে মুখোশধারীরা।