ঢাকা অফিস- শিক্ষা প্রশাসনের আলোচিত ৩০ কর্মকর্তাকে রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন সরকারি কলেজে বদলির জন্য আজ বৃহস্পতিবার একাধিক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী সপ্তাহে আরো কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলির আদেশ জারি হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন শাখায় বিশেষ করে মন্ত্রীর দপ্তরের একাধিক কর্মচারীসহ ১৪ জন কর্মচারীকে অন্য শাখায় বদলি করা হয়েছে।
আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি কলেজ শাখার সিনিয়র সহকারি সচিব ফাতেমা তুল জান্নাত স্বাক্ষরিত একাধিক প্রজ্ঞাপনে এসব বদলির তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে।
জানুয়ারি মাসে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ আরো একজনকে ঘুষ-দুর্নীতির সুস্পষ্ট অভিযোগে আটকের মধ্য দিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। ফেব্রুয়ারি জুড়ে চলমান এসএসসি পরীক্ষার সবক’টি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় ভয়াবহ ইমেজ সংকটে পড়ে। সরকারের ভেতর থেকেই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে অপসারনের দাবি উঠে। সংসদে সরকারের শরীক দল জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী সদস্য জিয়াউদ্দিন বাবলু শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি জানান।
ঘরে-বাইরে প্রচণ্ড চাপের মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরসহ (মাউশি) বিভিন্ন অধিদপ্তর, সংস্থা ও বোর্ডের আলোচিত ৩০ কর্মকর্তাকে আজ ঢাকার বাইরে বদলির আদেশ দেয়া হলো। এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রীর দপ্তরের ১৪ কর্মচারীকে বদলি করা হলেও, মন্ত্রণালয়ের উচ্চ-পদস্থ কোনো কর্মকর্তাকে আজ পর্যন্ত বদলি বা দপ্তর পরিবর্তন করা হয়নি।
আজ আদেশে যেসব কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে তাদের প্রায় প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
যাদের বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কর্মকর্তারা হলেন, তদারক ও মূল্যায়ন শাখার পরিচালক ড. মো. সেলিম, উপ-পরিচালক মেসবাহ উদ্দিন সরকার, এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার, শফিকুল ইসলাম সিদ্দিকি, খ ম রাশেদুল হাসান, সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন, মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাতজন কর্মকর্তাকে বদলির আদেশ হয়েছে, তারা হলেন- কলেজ পরিদর্শক আশফাকুস সালেহীন, বিদ্যালয় পরিদর্শক এ টি এম মঈনুল হোসেন, উপ-পরিচালক ফজলে এলাহী, উপ-সচিব মোহাম্মদ নাজমুল হক, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাসুদা বেগম, উপ-কলেজ পরিদর্শক ও শিক্ষামন্ত্রীর সাবেক সহকারী একান্ত সচিব মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অদ্বৈত কুমার রায়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) উৎপাদন নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল মজিদ ছাড়াও সম্পাদক দিলরুবা আহমেদ, বিশেষজ্ঞ ফাতেমা নাসিমা আক্তার, বিশেষজ্ঞ মনিরা বেগম ও শাহীনারা বেগম, গবেষণা কর্মকর্তা মারুফা বেগম, মো. হাবিবুল্লাহ ও মোহাম্মদ শাহ আলম এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক মো. কাওসার হোসেনকে বদলি করা হয়েছে।
বদলিকৃত এসব কর্মকর্তাকে রাজবাড়ী, নারায়ণগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, খুলনা, যশোর, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, জয়পুরহাট, ফেনী, মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, শরীয়তপুর, ভোলা, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, বগুড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বরিশাল, পটুয়াখালী, ফরিদপুরের বিভিন্ন সরকারি কলেজে পাঠানো হয়েছে।
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের এসব শিক্ষক প্রশাসনিক পদে চাকরি করেই অনেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি নিয়েছেন।