ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দেয়ার কথা শিকার করেছে হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি নূর উদ্দিন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে দেয়া স্বীকারোক্তিতে সে জানিয়েছে, আলেম সমাজকে অপদস্থ করার ‘শাস্তি’ হিসেবে নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত নেয় প্রধান আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ঘনিষ্ঠ সহযোগী নূর উদ্দিনসহ অন্যরা।
নূর উদ্দিন আরও জানায়, এলাকায় সিরাজ উদ দৌলা বাহিনী অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় পুড়িয়ে মারার ঘটনা সামাল দিতে পারবে এমন বিশ্বাস ছিল তাদের।
অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্বদাতা নূর উদ্দিনকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকার সিডস্টোর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ ব্রাঞ্চ।
ওই হত্যাকাণ্ডে অন্তত ১৩ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পিবিআই। এদের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নূরের দেয়া তথ্য থেকে পিবিআই জানিয়েছে, আগুন দেয়ার সময় বোরকা পরা চারজনের মধ্যে দু’জন পুরুষ ছিল।
তবে ঘটনা চাপা দিতে গভর্নিং বডির কোনো সদস্যের সম্পৃক্ততা ছিল কিনা তা স্পষ্ট করে জানাননি তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
এর আগে ২৭ মার্চ নিজ কক্ষে ঢেকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে।এ ঘটনায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন শিক্ষার্থীর পরিবার।এরপর রাফির পরিবারকে মামলা তুলে নিতে অনবরত হুমকি দিয়েছিলেন অধ্যক্ষের সহযোগীরা।ওই মামলায় সিরাজ উদদৌলা কারারন্তীন থাকাকালীন ৬ এপ্রিল ওই শিক্ষার্থীকে মাদরাসার ছাদে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে চার মুখোশধারী।এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজসহ ৮ জনকে আসামী করে থানায় রাফির পরিবার মামলা দায়ের করলে পুলিশ এই পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করে ১১জনকে ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।আদালত শুনানি শেষে বিভিন্ন মেয়াদে তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দীর্ঘ ৫ দিন শরীরের ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা নিয়ে বুধবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে মৃত্যুবরন করেন রাফি। বৃহস্পতিবার সোনাগাজী সাবের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাযার নামাজ শেষে সন্ধ্যায় পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাদির কবরের পাশে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকে দাফন করা হয়।