ফেনী
মঙ্গলবার, ২১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সন্ধ্যা ৭:৪১
, ২৮শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

নুসরাত হত্যা মামলার আসামী আ.লীগ নেতার মুক্তির দাবীতে পোস্টারিং !

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফী হত্যা মামলার আসামী সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রুহুল আমিনের মুক্তির দাবীতে পোস্টারিং করা হয়েছে। সোমবার রাত থেকে সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগ, সকল সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে ফেনী শহর ও সোনাগাজী উপজেলা জুড়ে এই নেতার মুক্তির দাবী সম্বলিত পোস্টারে চেয়ে গেছে।যদিও এই পোস্টারিং এর সাথে দলীয় কোন সম্পর্ক নাই।বলে দাবী করেছেন উপজেলা আ.লীগ, সহযোগি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।পোস্টারে সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি জনাব রুহুল আমিন ভাই এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি চাই।উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যপারে জেলা আ.লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম জানান, তাকে উপজেলা আ.লীগ সভাপতি দাবী করে মুক্তি চেয়ে পোস্টারিং করা ঠিক হয়নি। যারা পোস্টারিং করেছে তারা তাকে সাবেক সভাপতি লেখা উচিৎ ছিল। আমার জানা মতে তার মুক্তির দাবীতে ছাপানো পোস্টারের জেলা বা উপজেলা আ.লীগের কোন সম্পর্ক নাই।
উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক মফিজুল হক জানান, এই পোস্টারিং এর সাথে সোনাগাজী উপজেলা আ.লীগের কোন সম্পর্ক নাই। উপজেলা আ.লীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, পোস্টারিং এর সাথে উপজেলা আ.লীগের কোন সম্পর্ক নাই। সোনাগাজী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজিজুল হক হিরন ও সাধারন সম্পাদক নূরুল ইসলাম ভূট্টো জানান, পোস্টারিং এর সাথে যুবলীগের কেউ জড়িত নাই। সাংগঠনিকভাবে কাউকে এসব পোস্টারিং এর দায়ীত্বও দেয়া হয়নি।
নুসরাত হত্যা মামলায় গত ২৯মে রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদানের পর ৩০ মে জেলা আ.লীগের এক জরুরী সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় উপজেলা আ.লীগের সভাপতি রুহুল আমিন একটি মামলায় কারাগারে থাকায় অধ্যাপক মফিজুল হক কে উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে।

গত ২৭ মার্চ মাদরাসার আলিম পরিক্ষার্থী রাফীকে নিজ কক্ষে ঢেকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে রাফীর পরিবার মামলা দায়ের করেন।এরপর মামলা তুলে নিতে রাফীর পরিবারকে হুমকি দেয় সিরাজের ক্যাডার বাহিনী।ওই মামলায় সিরাজ উদদৌলা কারাগারে থাকা অবস্থায় ৬ এপ্রিল রাফীকে মাদরাসার ছাদে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে মুখোশধারীরা।এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করে নুসরাতের ভাই নোমান থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামীসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।২১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের মধ্যে নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন্নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহাম্মদ, অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা,ইমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রান ও মহি উদ্দিন শাকিল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। তাঁরা ১২ জনই রাফী হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে চঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছে।

গত ২৮ মে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রুহুল আমিনসহ ১৬ জনকে আসামী করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা। ৩০ মে বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইন অভিযোগপত্রসহ মামলার নথি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পাঠিয়ে দেন।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!