ফেনী
রবিবার, ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৮:৩৬
, ১০ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

কলেজ শিক্ষকদের ধর্মঘটে ক্ষেপেছে মন্ত্রণালয়

ঢাকা অফিস>>>
জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত ২৮৩ কলেজে শিক্ষকদের শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তির বিরোধীতার ইস্যুতে আন্দোলন শুরু করা বিসিএস শিক্ষা সমিতির ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অমান্য করায় এ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এমন প্রেক্ষাপটে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে উসকানিমূলক আন্দোলনের পেছনে বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকদের ভূমিকা। খতিয়ে দেয়া হবে শিবিরপন্থী শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের গতিবিধি। এছাড়াও গত রোববার শিক্ষা ক্যাডারে সমন্বিত পদ সৃষ্টির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনেকটা ভেস্তে যায় বাস্তব পরিস্থিতির কারণে।

মন্ত্রনালয়ের বরাত দিয়ে দৈনিক শিক্ষা’র প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয়করণ হওয়া শিক্ষকদের ক্যাডার মর্যাদা দেয়ার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে সমিতি। ৪০ বছর ধরে এভাবে চলে আসলেও তার এর বিরোধীতা করছেন। ২০০০ বিধি বাতিল করে নতুন একটি বিধিমালা তৈরি করে সদ্য জাতীয়ককৃত শিক্ষকদের নন ক্যাডার রাখার দাবীতে আন্দোলন করছেন তারা।  আবার তালিকাভুক্ত কলেজ শিক্ষকরা চাইছেন ৪০ বছরের ধারাবাহিকতায় তারা ক্যাডারভুক্ত হবেন। এই জটিলতা নিরসন করতেশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অরুণা বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে।

কমিটিকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, নতুন বিধি করার পর জাতীয়করণ কলেজগুলো সরকারি আদেশ (জিও) করতে। ওই বিধিতে যেন দুই পক্ষের স্বার্থ সংরক্ষিত থাকে সে ব্যাপারে বলা হয়েছে। কোনো পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এমন বিষয়গুলো নিয়ে কমিটি  একাধিক বৈঠক করে একটি প্রস্তাবিত খসড়া তৈরি করছে। ওই খসড়া শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের জন্য পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় শিক্ষক সমিতির নেতারা মহাসমাবেশ করে দুইদিনের কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিতে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ দুই ব্যক্তিত্ব। রোববার শিক্ষা প্রশাসনের নতুন পদ সৃষ্টির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে শিক্ষা সচিব ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বের হয়ে যান সচিব মো: সোহরাব হোসাইন।

একাধিক সূত্রমতে,  বৈঠকে ঢুকেই সচিব বলেন, কোনো পদ সৃষ্টি হবে না। যারা রাস্তায় আন্দোলন করে তারা রাস্তায় সমাধান করুক। তবে বিসিএস শিক্ষা সমিতির নেতারা বলছেন, একটি বিধি করতে কতদিন লাগবে? এর আগে জাতীয়করণ হওয়া ৪৩ কলেজ ও ১২ মডেল কলেজের শিক্ষকদের ক্যাডার মর্যাদা দিয়ে আত্তীকরণ করা হয়েছে। একই পন্থায় ২৮৩ কলেজের জিও হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে বিসিএস শিক্ষা সমিতির সভাপতি প্রফেসর আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার  বলেন, শিক্ষকদের ‘ক্যাডার বহির্ভূত’ রেখে একটি বিধিমালা জারির দাবি করছি। এ দাবিতে প্রায় এক বছর ধরে আন্দোলন করেছি। কিন্তু
সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস দেয়া হয়নি। এরমধ্যে বিধি জারি হলে আমরা এই শঙ্কায় থাকতাম না। তাই যত দ্রুত বিধি হবে ততই দ্রুত সমাধান। বিধির আগে জিও করলে আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করে বিসিএস শিক্ষা সমিতি। এই কর্মসূচি না করলে বৃহস্পতিবার দুপুরে সমিতিকে অনুরোধ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষকরা ইতিমধ্যে ঢাকায় চলে এসেছেন। এই অবস্থায় কর্মসূচি স্থগিত বা বাতিল করার সুযোগ নেই। আর কর্মবিরতির কর্মসূচি আসে ওই সমাবেশ থেকে। অন্যদিকে দুইদিনের কর্মবিরতি গতকাল শেষ হয়েছে। দাবি আদায় না হলে আগামী ৬, ৭ এবং ৮ই জানুয়ারি তিনদিনের কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছে সমিতি। শিক্ষকদের কর্মসূচির কারণে গতকাল সারা দেশের সরকারি কলেজের সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
নজিরবিহীনভাবে তাদের কর্মসূচির সমর্থনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্ত কলেজসূহের পরীক্ষা স্থগিত করেছে।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!