ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের ধর্মপুর এডুকেশনাল এস্টেটের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বানিজ্যসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।ফলে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন।এদিকে প্রধান শিক্ষকের এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করায় সহকর্মী ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলার ঘটনায় আদালতে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়।আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলার তদন্ত শুরু করছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগ ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগ বাণিজ্য, আর্থিক অনিয়ম, সরকারি বিধিমালা লঙ্গন ও স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত ছিলেন।প্রতিষ্ঠানের দৈনিক আদায়কৃত টাকা ব্যাংক হিসেবে প্রেরণ না করা, যাবতীয় ব্যয় একাউন্ট পেয়ী চেকের মাধ্যমে না করা, বিনা ভোটে জোরপূর্বক তিনটি কমিটি গঠন, উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থী থেকে বেতন আদায়, শিক্ষক প্রতিনিধিদের শিক্ষক মেসে নিম্ম মানের খাবার পরিবেশন ও আওয়ামী পন্থী কমিটির জন্য উন্নত মানের ভোজের আয়োজন, রেজুলেশন থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা টাকা প্রদানে টালবাহানা, প্রভাতী ও দিবা আলাদা শিফট হলেও দুই শিফটকে একত্রে বসিয়ে শ্রেণি পরিচালনা, ব্যয় নীতিমালা লঙ্গন করে ব্যয় করা পূর্ববর্তী বছরের আয়-ব্যয়ের নীরিক্ষা রিপোর্ট প্রতিবেদন মিটিং এ উপস্থাপন না করে বাজেট মিটিং করা, স্কুল বন্ধের দিনে কমিটির সভা আহবান করাসহ প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ করে প্রতিকার চেয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের সভাপতির নিকট লিখিত আবেদন করেন শিক্ষক আব্দুল লতিফ ও ছায়েফ উদ্দিন।
এর আগে গত ১১ আগষ্ট প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বাজেট বহির্ভূত খাতে ব্যয় করা ও পাওনা টাকা না পাওয়াসহ নানা অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের সভাপতি বরাবর ২৫ জন শিক্ষক কর্মচারী লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
এদিকে ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সহকর্মী ছায়েফ উদ্দিনের উপর হামলা ও মারধর করা হয়।খবর পেয়ে ছেলে ছায়েফ উদ্দিনকে দেখতে যাওয়ার পথে তারা কুচানামক স্থানে মাতা ফেরদৌস আরাকেও মারধর করে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা।এসব ঘটনায় প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ১৭ সেপ্টেম্বর বাদি হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন দুই ভুক্তভোগী।আদালত শুনানি শেষে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য ফুলগাজী থানার ওসিকে আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফুলগাজী থানার এসআই মাসুদ আলম জানান, অভিযোগের সঠিক তদন্ত করে যথাসময়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রশাসনের তদন্ত কমিটি ও পুলিশ কোন সত্যতা পাবেনা।একটি মহল তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত চক্রান্ত করছে বলে দাবি করেন তিনি।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের সভাপতি তানিয়া ভুইয়া জানান, উক্ত ঘটনায় উপজেলা কৃষি অফিসারকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।