শহর প্রতিনিধি- বহুল আলোচিত ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক চলছে। মঙ্গলবার তৃতীয়দিনও আদালতে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এদিকে বিএনপির নেতা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনারের পক্ষে ঢাকার আইনজীবি এডভোকেট আব্দুল মান্নান ও চট্টগ্রামের আইনজীবি এডভোকেট কপিল উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন । ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তিতর্কের জন্য দিন ধার্য্য রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাক্ষ্যগ্রহন, সাফাই সাক্ষীর জেরা শেষ হওয়ার পর রবিবার থেকে সরকার পক্ষে ও আসামী পক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয়েছে।
পিপি হাফেজ আহম্মদ জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত জেলা দায়রা জজ আমিনুল হকের আদালতে আসামী পক্ষের আইনজীবিরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এদিকে বিএনপির নেতা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনার নির্দোশ দাবি করে এডভোকেট আব্দুল মান্নান, এডভোকেট কপিল উদ্দিন ও সাহাব উদ্দিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন নান্নু, এডভোকেট নরুল হক, এডভোকেট সিরাজুল হক মিন্টু আসামি রাজু সহ ৪ জনের পক্ষে ও আহসান কবির বেঙ্গল ৮ জন আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থান করেন এবং আসামীদের নির্দোষ দাবি করে তাদেরকে বেকসুর খালাস দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান।
পিপি হাফেজ আহম্মদ আরো জানান, এ মামলায় ৫৯ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৫০ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলার চার্জশীটভুক্ত ৫৬ জন আসামীর মধ্যে ১৬ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদান করেছেন। স্বীকারোক্তি প্রদান করা ১৬ জনের মধ্যে হেলাল উদ্দিন নামে একজন পরে রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করেন। এছাড়া মামলার প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীরাও একরামুল হকের গাড়ির গতিরোধ, গুলি করে, কুপিয়ে ও গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার রোমহর্ষক বর্ননা দিয়েছেন। সরকারী আইনজীবী আসামীদের মৃত্যুদন্ডসহ সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
পিপি হাফেজ আহম্মদ আরো জানান, মামলার চার্জশীটভুক্ত ৫৬ জন আসামীর মধ্যে বর্তমানে ১৪ জন কারাগারে, ২৪ জন জামিনে ও ১৭ জন পলাতক রয়েছেন। পলাতকদের মধ্যে ৭ জন জামিনে গিয়ে পলাতক এবং ১০ জন একরাম হত্যা মামলা দায়েরের পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। এছাড়া জামিনে থাকা মো. সোহেল ওরফে রুটি সোহেল নামে একজন আসামী ইতিমধ্যে র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন।
প্রসঙ্গত; ২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের একাডেমি এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হককে গাড়ীর গতিরোধ করে কুপিয়ে, গুলি করে ও গাড়ীসহ পুড়িয়ে হত্যা করে আসামীরা। এ ঘটনায় একরামের ভাই রেজাউল হক জসিম বাদী হয়ে বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনারের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জনকে আসামী করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।