ফেনী
বৃহস্পতিবার, ১০ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৮:৫০
, ১৪ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনাম:
ফেনী শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ভরাটকৃত খাল পুনরুদ্ধারের দাবীতে মানববন্ধন ফেনীতে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৫ স্থানে ভাঙন ৩০ গ্রাম প্লাবিত,পানিবন্দি অর্ধলক্ষ্য মানুষ মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত,বাধের ৫ স্থানে ভাংগন,বন্যার আশংকা ফেনীতে ব্যাপক জলাবদ্ধতা,পানিবন্দি হাজারো মানুষ,দুর্ভোগ চরমে স্থানীয় নির্বাচন আগে করতে হবে ফেনীতে অস্ত্রসহ ছাত্রদলের দুই নেতা আটক ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার রাতের ভোটের’ দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেন নুরুল হুদা ক্ষমতায় এলে চব্বিশের শহীদদের নামে স্থাপনা-সড়কের নামকরণ করবে বিএনপি

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৭ স্থানে ভাঙন

ফেনীতে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ

ভারতীয় উজানের পানি ও টানা বর্ষণে ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৭টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।এতে করে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার প্রায় ৩৫টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়।ফলে ফেনী-ফুলগাজী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।এতে করে মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।তবে ধীরে ধীরে আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে ছুটছে মানুষ।ইতিমধ্যে ৩৮০ পরিবারের ১৫৩২ জন ১৯ টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয়গ্রহণ করেন।তাদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ফুলগাজী উপজেলায় ৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রাখা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৩২টি মাধ্যমিক ও ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরশুরাম উপজেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে আরও ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র।ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে।ফুলগাজীতে ২টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৩৬টি পরিবারের ৮৫ জন। পরশুরামে ২টি কেন্দ্রে রয়েছে ৫টি পরিবারের ২০ জন এবং ফেনী সদর উপজেলার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৭টি পরিবারের ২৮ জন

পাউবো ফেনীর তথ‍্য মতে, জেলায় ৮ জুলাই বিকাল ৩ টা হতে ৯ জুলাই বিকাল ৩ টা পর্যন্ত ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী মুহুরী নদীর বিপদসীমার ০.৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

দীর্ঘ সময় ধরে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় পরশুরামে মুহুরী নদীর ডান তীরে জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ ভারত টাই বাঁধের সংযোগস্থল দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। মুহুরী নদীর উভয় তীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে জঙ্গলগোনা ২ টি (মুহুরী, ডান তীর), উত্তর শালধর ১টি (মুহুরী নদীর ডান তীর), নোয়াপুর ১ টি (মুহুরী নদীর বাম তীর), পশ্চিম অলকা ১ টি (মুহুরী নদীর বাম তীর), ডি এম সাহেবনগর ১ টি (সিলোনিয়া নদীর বাম তীর), পশ্চিম গদানগর ১ টি (সিলোনিয়া নদীর বাম তীর), দক্ষিণ বেড়াবাড়ীয়া ১ টি (কহুয়া নদীর বাম তীর), পূর্ব সাতকুচিয়া ১ টি (কহুয়া নদীর ডান তীর), উত্তর টেটেশ্বর ১টি (কহুয়া নদীর বাম তীর) সহ ১০ টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

এদিকে হয়েছে ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর দেড়পাড়া ২ টি (মুহুরী নদীর ডান তীর), শ্রীপুর ১টি (মুহুরী নদীর ডান তীর), উত্তর দৌলতপুর ১ টি (কহুয়া নদীর ডান তীর), কমুয়া ১ টি (সিলোনিয়া নদীর বাম তীর) সহ ৫ টি স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়।

এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন স্থানে পানি উপচিয়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।তবে বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। সবশেষ সকাল ৯ টায় পানির লেভেল ছিল ১৩.৩১ মিটার।

এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৭টি স্থানে ভাঙন দেখা দেখা দেওয়ায় ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ৩৫টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়

 
এদিকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ‍্য মতে, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘জেলায় টানা দুদিন ধরে মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার ও বৃহস্পতিবারও জেলাজুড়ে মাঝারি বা ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন বলেন, নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রাত ১২টার পর মুহুরী নদীর পানি কিছুটা কমেছে। উজানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি প্রবাহ বাড়বে। আরও নতুন বাঁধ ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।
 
ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসছেন।দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের জন্য সাড়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।পাশাপাশি সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে।

ট্যাগ :

আরও পড়ুন


Logo
error: Content is protected !!