যথাযোগ্য মর্যাদায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফেনী মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে শহরের জেল রোডস্থ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন।
পরে দিবসটি উপলক্ষে বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মো. বাতেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল মোতালেব প্রমুখ
সভায় বক্তারা বলেন, বিজয় দিবসের ১০ দিন আগেই হানাদার মুক্ত হয় ফেনী। মুক্তিযুদ্ধের ২নং সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বে ৬ ডিসেম্বর ভোরেই মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে ফেনী প্রবেশ করে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে পুরো শহর প্রকম্পিত করে তোলে।
বক্তারা আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থান নিয়ে শত্রুর মোকাবিলায় আস্তে আস্তে অগ্রসর হতে থাকেন। পরশুরামের বিলোনীয়ায় পাকসেনাদের সাথে কয়েক দফা সম্মুখ লড়াই হয় মুক্তিযোদ্ধাদের। সর্বশেষ ৪ নভেম্বর রাতে মুহুরী নদীর পাড় ঘেঁষে পরশুরামে প্রবেশ করেন ১০ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ইপিআর সদস্য ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা। তাঁরা পাকসেনাদের দখলে থাকা চিথলিয়া ও পরশুরামের মজুমদার হাট ক্যাম্পের মাঝ বরাবর ঢুকে পড়ে শত্রুর অবস্থানে অতর্কিতে হামলা করে তাদের নাস্তানাবুদ করে তোলেন। দুপক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই শেষে ৭ নভেম্বর পরশুরামকে শত্রু মুক্ত করা হয়। শত্রু-অবস্থানের মাঝ বরাবর ঢুকে পড়ে যুদ্ধ করার এমন ঘটনা শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, বিশ্বের যুদ্ধের ইতিহাসেও বিরল। যে কারণে বিভিন্ন দেশের সামরিক শিক্ষার বইয়ে বিলোনিয়ার যুদ্ধ বিশেষ স্থান দখল করে আছে।